Pages

Friday, October 24, 2014

3 in 1 রাইডঃ সোনারগাঁ, পানাম সিটি ও বাংলার তাজমহল

                                       
এই রাইড কে আমি বলে 3in1 রাইড। কারণ আসলে একসাথে তিনটা রাইড এর কাজ এক রাইড এই হয়ে গেছে। J
...কথা বলতেছিলাম আমাদের “মাস্তুল সাইক্লিস্ট” এর গতকাল এর রাইড নিয়ে। কথা ছিল আমরা সকলে যাব সোনারগাঁ এর “লোকশিল্প জাদুঘর” আর “পানাম সিটি” তে সাইকেল চালিয়ে।
at Ramna Park Gate
কিন্তু কেন জানি ফেরার পথে কিঞ্চিৎ ডিট্যুর করে চলে গেছিলাম “বাংলার তাজমহল” খ্যাত এক জায়গায় যেখানে আগ্রার তাজমহল এর এক অনিন্দ সুন্দর মিনি তাজমহল তৈরি করা হয়েছে দুধের সাধ ঘোলে মেটাবার জন্য। অনেক ভালো লেগেছে আসলেই জায়গাটায় যেতে পেরে। ডিট্যুর করে প্রায় ১৫ কিমি. বেশি সাইকেল চালিয়ে গেছিলাম মাথায় তপ্ত রোদ নিয়ে। যাবার পথা বারবার মনে হচ্ছিল “ধুর বাল... জানি না কি না কি বানায়া রাখছে...! এই কষ্ট করে গিয়া  যদি দেখি সেরকম কিছু...!!!”
কিন্তু না। আমাদের হতাশ হতে হয় নাই। চরম জায়গা। শুধু একটা জিনিস মনে হচ্ছিল, জায়গা টা আগ্রার মতো একটু খোলামেলা হলে অনেক ভালো হত। একটু চিপাচিপা লেগেছে। এটা ছাড়া আর কিছু না। অনেক সুন্দর লেগেছে...
J


থাক... সময়ের কথা সময়ে বলা যাবে। এখন চলেন রাইড এর শুরু থেকে লেখা শুরু করা যাক।
...মাস্তুল সাইক্লিস্ট এর পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়েছিল এই রাইড এর। সোলাইমান ভাইয়া আমাকে এজন্য রাইড এর রুট তৈরি করতে অনেক সাহায্য করেছিলেন বিভিন্ন লিঙ্ক প্রোভাইড করে। তাকে থ্যাংকস জানাতেই হয়। এজন্য যে তার লিঙ্ক গুলো দেখে আমি সম্পূর্ণ নতুন একটা রুট তৈরি করতে পেরেছিলাম যে রুট এ সায়েদাবাদ, গুলিস্তান কে এভয়েড করতে পেরেছিলাম, আবার  নারায়ণগঞ্জ এর কাচপুর ব্রিজকেও এভয়েড করা আমাদের জন্য পসিবল হয়েছিল।সেভাবেই করেছিলাম রুট টা। কারণ কাচপুর ব্রিজে প্রায় সব সময়েই জ্যাম লেগেই থাকে। কারণ ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চিটাগং, ঢাকা-কুমিল্লা এর সব বাস ওই এক ব্রিজ দিয়েই পার হয়।

Tea Break
The speech of Bangabandhu
...তো আমরা যে কাজটা করেছিলাম সেটা হল একেবারে ধানমন্ডি থেকে সোজা চলে এসেছিলাম খিলগাঁও, সেখানে ফ্লাইওভার পার হয়েই বাম দিকের রোড ধরে সবুজবাগ হয়ে চলেছিলাম ডেমরা এর দিকে। সেখানে যাবার সময় অবশ্য সবুজবাগ এর দিকে প্রায় ২ কিমি. এর মতো বেশ জঘন্য রকমের একটা ভাঙ্গাচুরা রাস্তা পেয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে আমার সহরাইডাররা মোটামুটি আমাকে গালাগালি শুরু করেছিল এরকম রাস্তা বেছে নেবার জন্য।  যাইহোক সেই অফ রোড এর মতো রাস্তাটুকু পার হবার পরেই পেয়েছিলাম সেই রকমের একটা রাস্তা। চারদিকে লেকের মতো জলাবদ্ধ জমি, কাশফুল। বেশ নিরিবিলি একটা রোড। সেটা শেষ করে পউছিলাম ডেমরা তে। সেখান থেকে বায়ে টার্ন নিয়ে চলে গেছিলাম সুফিয়া কামার সেতুর দিকে। এখানে বলে রাখা ভালো, সোজা চলে গেলে কাচপুর ব্রিজ
পরত। সেটা না করে আমরা এই ব্রিজ দিয়ে ঢাকা-চিটাগং হাইওয়ে তে উঠেছিলাম। তার আগে অবশ্য ব্রিজ পার হতে গিয়ে অনেক কষ্ট হইছিল বলে ব্রিজ থেকে নেমেই রেস্টে গেছিলাম। আর এটাই ছিল আমাদের প্রথম জাত্রাবিরতি। ১ঘণ্টা ১২ মিনিট সাইকেল চালিয়ে ততক্ষনে ২৩ কিমি. পথ পাড়ি দিছিলাম। তারপর কিঞ্চিৎ চা পান করেই ঢাকা-চিটাগং হাইওয়ে ধরে দিলাম টান। খুব দ্রুতই পৌঁছে গেলাম সোনারগাঁ।









সেখানে সাইকেল পার্ক করেই খাদ্যের সন্ধানে বেড়িয়ে পরলাম। বড় বড় হোটেল/রেস্টুরেন্ট এড়িয়ে নিরিবিলি এক ছোট হোটেল এ নাস্তা সারলাম। এরপরে ধুকে পরলাম লোক শিল্প জাদুঘরে। সেখানে ঘরাফেরা করলাম ভালোই। ফটোশুটও করলাম ভালোই। অনেক অনেক অনেক ফটো। :D




In Panam City
সেখান থেকে আরেক টান দিয়ে চলে গেলাম পাশের পানাম সিটিতে। সেখানে ১৫/২০ মিনিটের মতো ফটোশুট করে আবার জাদুঘর এর সামনে ফিরে এলাম। 




বাংলার তাজমহল... 
....এরপরেই হুট করে পাপ্পু ভাইয়া এর মাথায় আসবো “তাজমহল” দেখার জন্য। আমি নিজেও কখনো যাই নাই। আমারও লোভ হইলো যাবার জন্য। লোকজনের কাছে ডিরেকসন নিয়ে জিপিএস লক করে শুরু করলাম আমাদের যাত্রা। তখন বুঝতে পাড়ি নাই যে এতো ডিস্টেন্স হবে।
জাইতেই আছি আর যাইতেই আছি। রাস্তা আর শেষ হয় না। শেষে পাপ্পু ভাইকে জুয়েল ভাইয়া আর আমি মিলে ঝাড়ি মারা শুরু করলাম আমাদের এরকম প্রলোভন এ ফেলার জন্য। অবশেষে এক সময় আমরা পউছিলাম আমাদের কাঙ্ক্ষিত সেই তাজমহল এ। বাইরে সাইকেল পারকিং করে রাখতে গিয়া পড়তে হল সমস্যায়।
যেখানে মোটর সাইকেল এর পার্কিং ২০ টাকা সেখানে আমাদের সাইকেল এর দাম ও রাখতে চাচ্ছে ২০ টাকা করে। অবশেষে বেশ কথাবারতা বলে ১০ টাকা পার পিস সাইকেল ঠিক করে ভিতরে প্রবেশ করলাম। প্রবেশ করতে গিয়েও আরেকবার হোঁচট খাইতে হল। L প্রতি জনের টিকেট ৫০ টাকা করে। আবার কিছু ঝাড়ি মেরে ভিতরে প্রবেস করলাম। কিন্তু প্রবেশ করেই মনে হল, না ঠিক আছে...





 ৫০ টাকা নিছে তো কি হইছে, ক্ষতি হয় নাই। অনেক সুন্দর একটা জায়গা এই তাজমহল।



J বিলিভ মি... প্রথম দেখাতেই ভালো লাগবেই লাগবে আপনাদের।
কিন্তু একটু ঘুরার পরেই মনে হবে এই জায়গা এতো ছোট কেন, এতো চিপা কেন... 
জায়গা টা আসলেই অনেক আঁটসাঁট। এতো অল্প জায়গায় এই জিনিস বানাইছে যে কেমন কেমন কেমন লাগে জানি।

আর একটা বড় সমস্যা দেখেছি, সেটা হল এই তাজমহল এর অবস্থায় মেইন হাইওয়ে থেকে বেশ কিছু দূরে।শুধু দুরেই না, রাস্তার অবস্থাও বেশ খারাপ।




তবে ঢাকা-সিলেট হাইওয়ে থেকে কিঞ্চিৎ কাছে হয়। এটা মাথায় রাখিয়েন। আপনাদের সুবিধার জন্য আমাদের সেই রাইড এর রুট এর এন্ডোমন্ডো লিঙ্ক দিলাম। সেখান থেকে দেখে নিতে পারেন।...এরপর প্রায় ৩০/৪০ মিনিটের মতো সেখানে অবস্থান করেছিলাম।







অনেক ছবি তুলে শেষে বেরিয়ে এসেছিলাম। বাইরে এক দোকানে বসে কিছু পুরি খেয়ে আপাত ক্ষুধা কিছুটা নিবারন করেছিলাম।
  
এরপরে সাইকেল নিয়ে সোজা ঢাকার পথে...




 
বেশ কিছু আকাবাকা চিপাচুপা রোড দিয়ে ঢাকা-সিলেট হাইওয়ে তে উঠেই টান। ৩/৮ এ তুলে ২৪ কেএমপিএইচ এ চলল সুফিয়া কামাল সেতু পর্যন্ত। অনেক কষ্ট হয়েছে ফিরতি পথে এই সেতুতে উঠতে। L জিব্বা বের হবার জোগাড় হয়েছিল দুপুর ১২ তার গনগনে রোদের কারণে।

ব্রিজ পার হয়েই আগে থেমে পরলাম রাস্তার পাশের ছায়া দেখে। সেখানে বসে বসে প্রায় ১ লিটার পানি সাবার করলাম স্যালাইন আর রিহাইড্রেসন সল্ট দিয়ে। এরপরে ধীরে ধীরে আমাদের যাত্রা আবার শুরু করি ১৫/২০ মিনিটের একটা ব্রেক নিয়ে। এরপরে অনেক ধীরে ধীরে চালাইছি। সবুজবাগ এর দিকে এসে এক মসজিদে নামাজ এর জন্য আরেকটা ব্রেক নিলাম, সেই ফাকে মোবাইলএও কিছু চার্জ দিয়ে নিলাম। এরপরেই এক টানে খিলগাঁও ফ্লাই অভার এর গোঁড়ায় জমায়েত।
সেখান থেকে আমি ফ্লাই অভার এর উপর দিয়ে হাতিরঝীল হয়ে হলে, আর ভাইয়ারাও তাদের মতো  করে বাসায়।

এসে এন্ডোমন্ডো অ্যাপ চেক করে দেখি প্রায় ৮০ কিমি. হইছে(৭৯.২৫)। সেই অবস্থায় রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে একটা ঘুম। তখনই প্লান করলাম আজকে ১০০ কিমি. মিল করবোই করবো। J
সন্ধ্যায় ঘুম থেকে উঠে  Teacher’s Training Collage এর মাঠে চলে গেলাম। সেখানে হচ্ছে বাইসাইকেল ফিস্ট। সাইকেল পাগলেদের মিলনমেলা। J সেখান থেকে প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসপত্র কিনলাম আমার সাইকেল এর সিকিউরিটি এর জন্য। এদিকে দেখতে দেখতেই আমাদের মাস্তুল পরিবারের অনেক মেম্বার চলে এলেন সেখানে। তাদের সাথে আড্ডা দিলাম। এরপরে সমাপনি অনুষ্ঠানে অনেক বড় বড় সাইক্লিস্ট এর কাছে তাদের অনেক রোমাঞ্চকর কথা শুনলাম। ৫৫ দিনে সাইকেলে দেশের ৬৪ টি জেলা ঘোরার কথা, ৮ দিনে তেতুলিয়া থেকে টেকনাফ সাইকেলে ভ্রমন, সাইকেলে এভারেস্ট এর বেস ক্যাম্প এ যাওয়া, ২৪ ঘণ্টায় ১০০ কিমি., ২০০ কিমি., ৩০০ কিমি. এমনকি ৪০০ কিমি. সাইকেল চালানোর মতো অবাক করা ঘটনাও শুনলাম। আর রোমাঞ্চিত হলাম।
এরপরে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে এলাম আমার পরিচিত হাতিরঝীল এ বাকি কিমি. গুলা পূরণ করার জন্য ১০০ কিমি. এর জন্য। এবং সাকসেসফুলই সেটা সম্পন্ন করলাম। হলে ফিরতে ফিরতে ১০৩ কিমি. হয়ে গেছিল।




Part-1: The moment when i've completed another 100kM long ride. 
Required 5h:20m:33s
On that moment my speed was 28.81 kmph...!!!! and average speed was 18.72 kmph....!
Part-2: The moment after returning hall completing the whole ride of 103.26 KM and total time required 5h:30m:20s and overall average speed was 18.75kmph.
Maximum speed was: 57.8 KMpH !!!
Most speedy lap was: 10th KM lap, 1m:43s

সব শেষে বলা জায়ম অনেক ভালোই গেছে আজকের এই সাইকেল রাইড টা। J
ধন্যবাদ জানাতেই হয় মাস্তুল সাইক্লিস্ট এর সবাইকে।
J
আবার দেখা হচ্ছে, হবে।

এখানে ক্লিক করে আমাদের এই ভ্রমন এর সব পিক দেখতে পারবেন ফেসবুক থেকে। ধন্যবাদ।

Our Ride Route

Thanks...
====> Always feel free to SHARE so that your friends can can know these informations. Keep visiting this blog site for more. U also can submit your email to SUBSCRIBE this blog.

Thanks again. :)


No comments:

Post a Comment