xmlns:fb='http://ogp.me/ns/fb#'> ‪বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট: আশীর্বাদ নাকি কেবল বিলাসিতা? দুরদর্শীতা নাকি অপরিণামদর্শিতা?? |Bappi

U also may b interested in these posts

 

Floadting Share

Get Widget

Monday, June 20, 2016

‪বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট: আশীর্বাদ নাকি কেবল বিলাসিতা? দুরদর্শীতা নাকি অপরিণামদর্শিতা??

...আমার বিশ্বাস লেখার শিরোনাম দেখে অনেকেই চমকে গেছেন। দেশের প্রযুক্তি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রজেক্ট বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ব্যাপারে দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা কেউ তেমন কিছু জানি না। জানি না বলার চেয়ে আমাদের জানানো হয় নি বলাটাই শ্রেয়। কোন ওয়েবসাইট, কোন ব্লগ কিংবা কোন ফেসবুক ইউজারের ওয়ালেও এ নিয়ে স্ববিস্তারে কোন লেখা নেই।
.
এবার আসুন আমরা আলোচনায় সরাসরি চলে যাই। লিখতে গেলে প্রচুর লিখতে হবে।
লেখার দৈর্ঘ্য কমানোর স্বার্থে অপ্রয়োজনীয় অংশ স্কিপ করব।
.

*** বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ব্যাপারে আলোচনা করার আগে আমরা পৃথিবীর সামগ্রিক স্যাটেলাইট ব্যবস্থা সম্পর্কে একটু জানব। ততটুকুই জানব যতটা আমাদের স্যাটেলাইটের সাথে কম্পেয়ার করার জন্য যথেষ্ট।
.
প্রথমেই প্রশ্ন আসে স্যাটেলাইট আসলে কি?
সহজ বাংলায় স্যাটেলাইট হচ্ছে ভূ-স্থির উপগ্রহ। পৃথিবী থেকে পৃথিবীর কক্ষপথে উৎক্ষেপন করা যন্ত্র বা যন্ত্রাংশ বিশেষ। পৃথিবী থেকে দেখলে যদিও এদেরকে স্থির মনে হয়, কিন্তু আসলে এরা মোটেই স্থির নয়। পৃথিবীর সমান গতি নিয়ে তারাও পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকে। তাহলে চলন্ত জিনিষটাকে স্থির মনে হয় কেন?
মনে করুন আপনি একজনের সামনাসামনি দাঁড়িয়ে আছেন। তারপর আপনি একপাক ঘুরলেন। সমান সময়ে সেও সমান বেগে একপাক ঘুরল। ফলে একপাক ঘুরার পর আবার আপনারা মুখোমুখি হয়ে যাবেন। দুজন দুজনকে আগের জায়গাতেই দেখতে পাবেন।
পৃথিবী থেকে স্যাটেলাইটকে স্থির অবস্থানে দেখার এটাই কারণ।
.
মহাকাশে প্রথম উপগ্রহ স্পুটনিক-১ পাঠিয়েছিল রাশিয়া ৪ অক্টোবর ১৯৫৭ তে। ইউরি গ্যাগরিন নামক প্রথম রাশিয়ান মানব মহাকাশে যান ভস্টক-১ চড়ে। দৃশ্যপটে এরপরই আসে যুক্তরাষ্ট্র। তারা ১৯৫৮ এর ৩১ জানুয়ারী পাঠায় এক্সপ্লোরার-১।
.
বাংলাদেশ সম্ভবত প্রথম স্যাটেলাইট পাঠাচ্ছে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে।
ধারণা করতে পারেন এর আগে কতটা স্যাটেলাইট পাঠানো হয়েছিল?
.
নাসা বলছে মহাকাশে পাঠানো মোট স্যাটেলাইটের সংখ্যা ৬৬০০। তবে Satelite Debris এর ওয়েবসাইট মতে সংখ্যাটা গত বছর পর্যন্ত ৭১৪২। তার মধ্যে মাত্র ৫৮% অর্থাৎ প্রায় ৪০৭৭ টি ঠিক জায়গামতো পৌছাতে সক্ষম হয়। এই ৪০৭৭ টির সবকটা কিন্তু অক্ষত অবস্থায় নেই। নাসার সর্বশেষ হিসেব মতে মাত্র ১০৭১ টি এবং UNOOSA এর মতে ১৩০৫ টি স্যাটেলাইট এখন কাজ করছে।
যেখানে UNOOSA এর আগষ্ট ২০১৫ এর হিসেব মতে ৪০৭৭ স্যাটেলাইটের মধ্যে ফিরিয়ে আনা হয়েছে ১৩২৯ টি, ১৫৩৯ টি কোন না কোন ভাবে ক্ষয় হয়ে গেছে আর একদম কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে ১৭৫ টি। 
.
স্যাটেলাইটের সবগুলোই যে পৃথিবীর কক্ষপথে পাঠানো এমন না। ৪৭ টি পাঠানো হয়েছে চাঁদে, ১৫ টি শুক্রে, ১৩ টি মঙ্গলে, ১ টি গ্রহানুপুঞ্জে।
.
২০১৪ সালে পুরো বছরে পাঠানো হয়েছিল ২৩৯ টি স্যাটেলাইট। আর ২০১৫ এর আগষ্ট পর্যন্ত পাঠানো হয়েছে ১০৬ টি।
.
স্যাটেলাইটের কিন্তু বেশ কিছু প্রকারভেদ আছে। এক স্যাটেলাইট দিয়ে সচরাচর একটা কাজই করা হয়।
.
সবচেয়ে বেশি যোগাযোগ ব্যবস্থা বা টেলিকমিউনিকেশনের কাজে ব্যবহার করা হয়। এর পরিমাণ প্রায় ৫৬%।
এর পরই আর্থ অবজারভেশন বা আবহাওয়া সংক্রান্ত কাজে ব্যবহার করা স্যাটেলাইটের সংখ্যা ২৬%।
প্রযুক্তিগত উন্নয়ন বা এস্ট্রোলজিক্যাল কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ১৪১ টি স্যাটেলাইট। নৌ সিগন্যাল কিংবা সামরিক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ৯১ টি স্যাটেলাইট।
স্পেস সায়েন্সের কাজে ব্যবহার করা হয় ৫% স্যাটেলাইট।
.
স্যাটেলাইট গুলোর মধ্যে বাণিজ্যিক স্যাটেলাইট ৫২%, সরকারী ৩০%, সামরিক ২৭%, সিভিলিয়ান (সচরাচর বিভিন্ন বড় ভার্সিটি) ৮%।
লক্ষ্য করে দেখুন সবগুলো পার্সেন্টেজ যোগ করলে ১১৫% হয়। তার মানে এই ১৫% স্যাটেলাইট হচ্ছে বহুমূখী কাজে ব্যবহার করার জন্য।
.
মহাকাশে সর্বোচ্চ ৩৪৮৮ স্যাটেলাইট পাঠিয়েছে রাশিয়া। বলাই বাহুল্য, তাদের স্যাটেলাইট নষ্টও হয়েছে সবচেয়ে বেশি।
বর্তমানে সচল স্যাটেলাইটের অর্ধেকেরও বেশি স্যাটেলাইটের মালিক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাঠিয়েছে ২১৩৭ টি স্যাটেলাইট।
.
স্যাটেলাইট ডেবরিস বলছে বিশ্বে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন করেছে এমন দেশের সংখ্যা ৫৮টি। সাথে সংস্থা আছে আরো ২০টি। তবে আমাদের দেশ থেকে জানানো হচ্ছে আমরা ৪১ তম দেশ হিসেবে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন করব। সম্ভবত এটা পুরাতন হিসেব। সম্পূর্ণ নিজস্ব প্রযুক্তি কাজে লাগিয়েছে ১০ টি দেশ। তারা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স, জাপান, উত্তর কোরিয়া, ভারত, ইরান এবং ইসরায়েল।
.
পৃথিবীর সামগ্রিক স্যাটেলাইট ব্যবস্থা ব্যাপারে আপাতত আলোচনা এতটুকুই। প্রয়োজনে আবার ফিরব। এখন আমরা সরাসরি চলে যাচ্ছি বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে।
.
দুঃখজনক হলেও প্রত্যাশিত সত্য যে আমাদের স্যাটেলাইট ব্যাপারে তেমন কোন তথ্য কোথাও নেই।
ইউকিপেডিয়ায় হাস্যকরভাবে মাত্র দশ লাইনে বর্ণনা করা হয়েছে প্রজেক্ট। তার মধ্যে সাড়ে তিনলাইন ব্যাপী স্পারসো আর ডাক ও টেলিযোগাযোগ সংস্থার পূর্ণরূপ লেখা।
ইউটিউবে এ নিয়ে ভিডিও রয়েছে মোট চারটি। ৬ মিনিটের একটি ভিডিও তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক পাবলিশড করা। এখানে স্যাটেলাইটের চেয়ে বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গবন্ধু কন্যার জীবনী অধিক গুরুত্ব পেয়েছে।
.
বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা তথ্য এক করলে যা দাঁড়ায় সেটা হচ্ছে সরকার প্রথম এই ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করে ২০১২ সালে। তারপর অনেকটা টেন্ডার করে এসপিআই কে সাড়ে ৮২ কোটি টাকা দিয়ে দায়িত্ব দেয়া হয় কোন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান খুঁজে বের করার জন্য।
তারা বের করে নিয়ে আসে ফ্রান্স প্রতিষ্ঠান থ্যালেস এলেনিয়া কে। প্রতিষ্ঠানের সভাপতি লুইস গ্যালির সাথে চুক্তি সাক্ষরিত হয় ১১ নভেম্বর ২০১৫ সালে।
.
বক্তব্য দানকালে গ্যালি চমৎকার ইংরেজীতে বলেন, "এই চুক্তির মাধ্যমে ফ্রান্সের সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্ব জোরদার হয়ে গেল।"
.
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট নিয়ে পুরো দেশকে আশ্চর্যজনকভাবে অন্ধকারে রাখা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ধোঁয়াশা প্রজেক্টের আর্থিক হিসেব নিয়ে। প্রকল্পের টাকার পরিমাণ বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রূপে প্রকাশ পেয়েছে।
যতটুকু জানা গেছে রাশিয়ান মহাকাশ সংস্থা ইন্টারস্পুটনিকের কাছ থেকে ১৫ বছরের জন্য ২১৯ কোটি টাকায় অরবিটাল স্লট ভাড়া নিয়েছে বাংলাদেশ। চুক্তি নবায়ন করা যাবে ১৫ বছর পরপর। থ্যালেস এলাইনার সাথে চুক্তি ১৯৫১ কোটি টাকার। তবে প্রকল্পের মোট ব্যয় একেক জায়গায় একেক রকম বলা হয়েছে। ৭১ টিভি বলছে ব্যয় চার হাজার কোটি টাকা। আর চ্যানেল নাইন বলছে ২৯৬৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দেবে ১৩১৫ কোটি টাকা এবং সেবা নেয়া প্রতিষ্ঠান অগ্রীম দেবে ১৬৫২ কোটি টাকা। আমরা আপাতত চ্যানেল নাইনের তথ্যটা নেব।
ভূমি অধিগ্রহন করা হয়েছে রাঙামাটির বেতবুনিয়া এবং গাজীপুরে।
.
আসুন দেখি বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সফল হলে সংশ্লিষ্টদের মতে আমরা কি সুবিধা পেতে যাচ্ছি?
.
১। তথ্য অধিদপ্তর মতে টেলিকমিউনিকেশন বাবদ সরকার এবং বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বছরে প্রায় ১১ মিলিয়ন ডলার বা ১০০ কোটি টাকা বিদেশে দিচ্ছে। সেই টাকার পুরোটা দেশেই থাকবে।
.
২। আবহাওয়া এবং সামরিক ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্য লাভ করবে বাংলাদেশ।
.
৩। স্যাটেলাইটের মোট ৪০ টি ট্রান্সপন্ডারের মধ্যে ২০ টি ব্যবহার করবে বাংলাদেশ। বাকি ২০ টি ভাড়া দেয়া যাবে। নেপাল, ভূটান, মায়ানমার কিংবা ভারতের সেভেন সিস্টার্স কে ভাড়া দিয়ে বাংলাদেশ বছরে ৩০০-৪০০ কোটি টাকা অনায়াসে লাভ করতে পারবে।
.
৪। আরব-কাজাখ থেকে ইন্দোনেশিয়া-মালেশিয়া-ফিলিপাইন পর্যন্ত বিস্তৃত হবে এর রেঞ্জ। ভাড়া দেয়া যাবে এসব দেশকেও।
.
৫। নতুন করে ১০০ জন মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।
.
৫। মাত্র ৬-৭ বছরের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট লাভজনক প্রকল্পে পরিণত হবে। বহির্বিশ্বে এলিট সোসাইটিতে স্থান পাওয়ার পাশাপাশি লাভের অংকটাও হবে হিংসে করার মতো।
.
...
আলোচনার এ পর্যন্ত অংশ আশাব্যঞ্জক।
তবে কিছু ধোঁয়াশা এবং বেশ কিছু প্রশ্ন চলে আসছে আমাদের সামনে। এ পর্যন্ত লেখা পুরো অংশ এনালাইসিস করব এখন।
.
১। পৃথিবীর যত দেশই স্যাটেলাইট উড়িয়েছে তারা প্রত্যেকেই ইনিশিয়াল স্যাটেলাইট নিজের অক্ষরেখায় উড়িয়েছে। বাংলাদেশ অবস্থান করছে ৮৬-৯১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমা রেখায়। সে হিসেবে বাংলাদেশ এ অবস্থানেই স্যাটেলাইট পাওয়ার কথা। ৮৮-৯১ এ রাশিয়ার দুটি সহ মোট চারটি স্যাটেলাইট রয়েছে। তাই এখানে স্থান পাওয়া সম্ভব না। কিন্তু ৮৬-৮৮ ডিগ্রি খালি থাকার পরও মহাকাশ সংস্থা আইটিইউ বাংলাদেশকে স্লট দেয় নি। 
বাংলাদেশ চেষ্টা করে ১০২ ডিগ্রিতে। সেখানে রাশিয়া, অষ্ট্রেলিয়া এবং গ্যালির ভাষ্যমতে বাংলাদেশের বন্ধু ফ্রান্সসহ বেশ কয়েকটি দেশ আপত্তি জানায়। তাদের আপত্তি ছিল বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট তাদের সম্প্রচারে বিঘ্ন ঘটাবে। দৌড়ানি খেয়ে বাংলাদেশ চেষ্টা করে ৬৯ ডিগ্রিতে। সেখানে একই আপত্তি নিয়ে চীন, সিঙ্গাপুর,মালেশিয়া সহ আরো কয়েকটি দেশ দৌড়ানি দেয়। ৪০ টির মধ্যে অর্ধেক দেশই বাংলাদেশকে দ্বিমুখী দৌড়ানী দেয়। 
.
দ্বিমুখী দৌড়ানি খেয়ে বাংলাদেশ সবশেষে স্থান পায় ১১৯.১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমা রেখায়।
প্রশ্ন হচ্ছে ৯০ ডিগ্রির বাংলাদেশকে ১১৯.১ ডিগ্রির স্যাটেলাইট কতটা নিখুঁতভাবে কাভার করবে?
.
যে কোন অবস্থানে থাকলেই যদি নিখুঁত কাভার করা সম্ভব হত তবে প্রতিটা দেশ কেন নিজের অবস্থানেই স্যাটেলাইট উড়ায়?
কিংবা কোন সমস্যা না হলে বাংলাদেশের ব্যাপারে তারা আপত্তি জানাল কেন?
.
সবশেষে আইটিইউ কেন খালি থাকার পরও বাংলাদেশকে ৮৬-৮৮ ডিগ্রিতে স্লট দিল না?
.
উত্তর যাই হোক না কেন সেগুলো নিশ্চয়ই বাংলাদেশের পক্ষে যাবে না।
.
২। বাংলাদেশের বিভিন্ন চ্যানেল বা বেসরকারি কোম্পানী কি বলা মাত্রই নিজের স্যাটেলাইট থেকে সেবা গ্রহণ করবে?
সেবার মান বিদেশী স্যাটেলাইট থেকে উন্নত হবে এই নিশ্চয়তা কে দেবে?
অতীতে টেলিটকসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রয়াত্ব প্রতিষ্ঠান থেকে "দেশের টাকা দেশে রাখুন" বলে স্লোগান তুললেও কাজের কাজ কিছুই করতে পারে নি। টেলিটকসহ যে কোন সরকারী সেবার মান কত জঘন্য সেটা সবাই জানে। জেনে শুনে কোন প্রতিষ্ঠান কেন এ পথে পা বাড়াবে?
.
৩। সরকার বিদেশে সেবা দিয়ে ৫০ মিলিয়ন ডলার আয়ের স্বপ্ন দেখছে। কিনবে কারা? ভুটান, নেপাল, মায়ানমার, আরব কিংবা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া।
আমরা নিজেরা এখনো সম্পূর্ণ রূপে ভারত নির্ভর। সে জায়গায় ভারত বাদ দিয়ে নেপাল ভুটান আমাদের কাছে থেকে সেবা নেবে এটা হাস্যকর যুক্তি। যুক্তিটাকে আরো হাস্যকর করার জন্য এশিয়ায় স্যাটেলাইট সংখ্যা দেখি।
ইন্দোনেশিয়া ১৩, জাপান ১৯৭, মালেশিয়া ৯/৭, পাকিস্থান ৩, ফিলিপাইন ২, থাইওয়ান ৯, আরব আমিরাত ৭, ভিয়েতনাম ৫, সিঙ্গাপুর ৪, থাইল্যান্ড ৮, সৌদি আরব ১৩, দক্ষিণ কোরিয়া ১৮, কাজাখস্থান ৫ টি, তুরষ্ক ১০, ইরান ৫, তুর্কেমেনিস্থান ১ টি।
হিসেব শেষ না। 
আরব স্টেট কমিউনিকিশন অর্গানাইজেশনের রয়েছে ১৩ টি, এশিয়া স্যাটেলাইট টেলিকম কোম্পানী ৭ টি, কমনওয়েলথের ১৪৯৬ টি।
.
বাকি কে?
ভুটান, নেপাল, মায়ানমারের প্রতিবেশী ভারতের মাত্র ৬৭ টি (ISRO মতে ৮৪, স্যাটেলাইন ডেবরিস মতে ৭১) আর চীনের মাত্র ২৪৪ টি।
.
এবার আপনি বলুন, এদের এতসব স্যাটেলাইট বাদ দিয়ে সদ্য আসমানে তোলা স্যাটেলাইট থেকে কে সেবা কিনবে?
আর যদি কেউ কিনতেই যায়, ভারত চীন তাদের ব্যবসার লসকে নিশ্চয়ই নীরবে মেনে নেবে না।
.
বাংলাদেশ আশা করছে ভারতও আমাদের একমাত্র স্যাটেলাইট থেকে সেবা কিনবে। অথচ তাদের নিজেদেররই যে ৮৪ টা স্যাটেলাইট আছে এটা বোধহয় বাংলাদেশ জানে না।
.
সহজ কথায় বিদেশ আমাদের সেবা কিনবে এটা কেবল গাছে কাঁঠাল রেখে গোঁফে তেল দেয়া না, গোঁফ-মাথা সুদ্ধ নিজেই তেলের টিনে ডুব দেয়া।
.
৩। শুরুতেই বলেছি স্যাটেলাইটের বিভিন্ন রকমফের আছে। একেকটা দিয়ে একেক কাজ করা হয়। এ জন্য মাত্র দশটা দেশ ও সংস্থা ছাড়া সবকটা দেশের একাধিক স্যাটেলাইট রয়েছে।
দাবী করা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট দিয়ে সব কাজ করা হবে।
এটা কি সম্ভব?
.
উদাহরণ হিসেবে যদি ভারতকে আনি তবে তাদের ৮৪ টা স্যাটেলাইটের মধ্যে ৩৪ টা স্যাটেলাইট কেবল টেলিকমিউনিকেশনের জন্য। বাকি গুলো আর্থ আবজারভেশন, নেভিগেশন বা স্পেস সায়েন্সের জন্য আলাদা আলাদা করা। ৮৪ স্যাটেলাইটের কেবল একটির কাজ দেখানো হয়েছে কমিউনিকেশন প্লাস আবহাওয়া মনিটরিং।
.
আমাদের সবেধণ নীলমণী দিয়ে বারমজা খাওয়া যাবে?
.
৪। সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাপার হচ্ছে আকাশে উৎক্ষেপন করা ৪২% স্যাটেলাইট কক্ষপথে যেতেই ব্যর্থ হয়েছে। কক্ষপথে গিয়ে ঠিকঠাক কাজ করছে মাত্র ১৫% স্যাটেলাইট।
আমাদের মতো দুর্বল প্রযুক্তির দেশের স্যাটেলাইট সেই ১৫% এর একটি হতে পারবে?
.
সচিব সুনীল কান্তি বোস নিজেও এই তথ্য স্বীকার করে বলছেন "বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই ব্যর্থতা মেনে নেয়া হবে না।"
না মেনে আপনি কি করবেন? মহাকাশে মাস্তানি চলে?
.
৫। বলা হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অগ্রীম ১৬৫২ কোটি টাকা দেবে। প্রশ্ন হচ্ছে তারা কি দিতে বাধ্য?
১৫% সাফল্যের সম্ভাবনার একটা প্রজেক্টে অগ্রীম টাকা দেয়ার কোন যৌক্তিকথা আছে?
সেবা নেয়ার আগেই কোন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা নেয়ার রেওয়াজ বিরল। আর বাংলাদেশের মতো দেশে কে এত টাকা দেয়ার রিস্ক কে নেবে?
.
৬। ধরে নিলাম অগ্রীম ১৬০০ কোটি টাকা পাওয়া গেল। এখন বাকি ১৩০০ কোটি টাকা কিভাবে আসবে সেটা কিন্তু সরকার বলেনি। যদি এই টাকা ঋণ করা হয় তবে এই ঋণের সুদ বছরে কত আসবে জানেন?
কম হলেও ৭০ কোটি। সচরাচর বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ হয় ৩০ বছর পর্যন্ত। তাহলে ৩০ বছরে কতটাকা সুদ দিতে হবে? ২১০০ কোটি টাকা!!
সাথে ইন্টারস্পুটনিককে ভাড়া বাবদ দিতে হবে বছরে ১৫ কোটি। তারমানে বছরে সুদে আর ভাড়াতেই চলে যাবে ৮৫ কোটি টাকা।
বিভিন্ন বেসরকারী কোম্পানীসহ যে ১০০ কোটি টাকা বাঁচানোর চিন্তা করা হচ্ছে সেই লাভের গুড় তো পিঁপড়াই খেয়ে ফেলবে।
.
ধরলাম ঋণ করা হবে না। অর্থমন্ত্রীর একবার বলেছিলেন, "বাংলাদেশ বৈদেশিক ঋণ নির্ভর না।"
কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন কথা বলছে।
২০১৪ সালে দেশের মাথাপিচু ঋণ ছিল ১৩১৬০ টাকা। বিগত এক বছরে যেটা বেড়েছে ৪৬০ টাকা। তার মানে আজকে যে শিশু জন্ম নিচ্ছে সেও ১৩১৬০ টাকা ঋণের বোঝা নিনিয়ে জন্ম নিচ্ছে।
.
সহজ বাংলায় ঋণ ছাড়া আমাদের কোন গতি নেই।
সুতরাং এই প্রজেক্টে ঋণ না আনলেও মেকআপ করতে অন্য প্রজেক্টে আনতে বাধ্য। হিসেব কিন্তু বরাবরই হয়।
.
৭। যতটা স্যাটেলাইটের নাম পড়েছি খুব সম্ভবত বিশ্বের আর কোন দেশের স্যাটেলাইটের নাম রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের নামে না। আমরা ইউনিক জাতি। নাম যেমন দিতে পারি পাল্টাতেও পারি। এক সরকার আরেক সরকারের প্রজেক্টের কেবল নামই বদলায় না, প্রায়ই বন্ধ করে দেয়।
ধরলাম প্রজেক্ট সম্পূর্ণ সফল। কিন্তু প্রায় ৫০ বছর মেয়াদী এই প্রকল্প পরের সরকার এসে ক্যারি করবে এর নিশ্চয়তা আছে?
.
দুঃখিত, একটু রাজনীতির দিকে যাই।
মহাজোট জিয়া এয়ারপোর্টের নাম বদল করেছিল ১২০০ কোটি টাকা দিয়ে। ঢাকায় আরেকটা এয়ারপোর্ট করা কঠিন। নইলে হয়তো এটা বন্ধই করে দিত।
.
স্যাটেলাইটে কিন্তু এই সুযোগ আছে। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে নিশ্চয়ই তারা বঙ্গবন্ধুকে আরামসে মহাকাশে উড়তে দেবে না।
তারাও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের নাম পরিবর্তন করতে এক হাজার কোটি খরচ করবে। কিংবা কোন ঝামেলায় না গিয়ে ডিরেক্ট স্যাটেলাইট মাটিতে নামিয়ে আনবে।
তারা নতুন করে "শহীদ জিয়া স্যাটেলাইট" আকাশে তুলতে পারে। এরপর তাদের লেজ ধরা জামায়াত কিংবা আওয়ামীলীগের লেজ ধরা বামফ্রন্ট কোনক্রমে যদি ক্ষমতায় আসে তবে তারা যে "শহীদ নিজামী স্যাটেলাইট" বা "শহীন ইনু স্যাটেলাইট" তুলবে না তারও কোন গ্যারান্টি নেই।
প্রতিক্ষেত্রে ৩০০০ কোটি চাপবে দেশের জনগণের ঘাড়ে।
.
৮। একটা স্যাটেলাইট ভাঙতে পারে, কক্ষচ্যুত হতে পারে। সেটা রিকোভার করার ক্ষমতা কি বাংলাদেশের আছে?
.
৯। তারানা হালিম রাজনীতির স্বভাবসুলভ ভাষায় বলেছেন "বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে দেশ সমুদ্রজয়ের পর এবার মহাকাশ জয় করছে। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশকে কেউ দাবায়া রাখতে পারবে না।"
আকাশ জয় কি রকম হচ্ছে সেটা আন্দাজ করা যাচ্ছে। নিজের অরবিটালে স্লট না পাওয়া, ২০ টা দেশের দৌড়ানি..এটা নিশ্চয়ই আকাশ জয়ের নমুনা না। তাছাড়া উনি বোধহয় জানেন না স্যাটেলাইট যুদ্ধও বিরল ঘটনা নয়। ২০০৭ এ চীন আমেরিকার একটি স্যাটেলাইট নামিয়ে দেয়, আমেরিকা পরের বছরেই চীনের একটি নামায়।
সম্ভাবনা অতি অল্প হলেও ভারত-চীন নিজের স্বার্থে আমাদের স্যাটেলাইট নামাবে না এটা কে বলতে পারে?
.
১০। কাজ দেয়া হয়েছে বিদেশী কোম্পানীকে। বিদেশী কোম্পানী কর্তৃক দেশের সম্পদ লুট বা নষ্টের ইতিহাস অনেক। ২৪ জুন ২০০৫ এ টেংরাটিলায় হাজার কোটি টাকার গ্যাস পুড়িয়েছিল নাইকো। সে মামলার কিচ্ছু হয় নি এখনো।
থ্যালেস এলাইটা এটা করবে না বা করলে তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলা যাবে এমন নিশ্চয়তাও নেই।
.
১১। খুব সহজ স্বাভাবিক প্রশ্ন নিজেরা স্যাটেলাইট তুললে যদি এতই সুবিধা তবে কেন মাত্র ৪০ টি ( বা ৫৮) দেশ স্যাটেলাইট তুলল?
ইউরোপের সবকটা দেশ বা উত্তর-দক্ষিণ আমেরিকার সবকটা দেশ কেন তুলল না?
তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা নিশ্চয়ই বাংলাদেশের চেয়ে ভালো।
.
...
দেশ হিসেবে আমরা নিম্ন-মধ্যবিত্ত। আমাদের সবকিছুতেই টাকার হিসেব আসে।
এ রকম একটা উচ্চ বিলাসী প্রজেক্ট হাতে নেয়ার আগে দেখতে হবে দেশের মানুষ কেমন আছে?
.
আসুন পাঁচটি মৌলিক চাহিদার মধ্যে আলোচনা সংক্ষেপ করার স্বার্থে কেবল "বাসস্থান" এবং "চিকিৎসা" এই দুটি চাহিদার চিত্র দেখি।
.
বর্তমানে দেশে গৃহহীন মানুষের সংখ্যা ১২%। ঢাকা শহরে ২০০৫ এ গৃহহীন ছিল ৪০ লাখ মানুষ। বর্তমানে সেটা নিশ্চয়ই কোটিতে চলে গেছে। দেশের ৬৩% মানুষই ভূমিহীন।
.
প্রধাণমন্ত্রী বলেছেন দেশে একটাও গৃহহীন মানুষ থাকবে না।
সেটা কি আদৌ সম্ভব?
.
কিন্তু আমাদের জন্য বড় উদ্বেগ নিয়ে আসছে আরেকটা তথ্য।
গবেষণামতে ২১০০ সাল নাগাদ উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে সমুদ্র পৃষ্টের উচ্চতা ৫ ফিট বাড়বে। দেশে নতুন করে গৃহহীন হবে তিন কোটি মানুষ।
বরগুনার একটা এলাকায় জায়গার অভাবে চৌকির নিচে প্রিয়জনের করব দিতে হচ্ছে। নদী ভাঙনে প্রতিনিয়ত গৃহহীন মানুষ।
.
এই অবস্থায় আকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট না উড়িয়ে "বঙ্গবন্ধু গৃহায়ন" প্রকল্প হাতে নেয়াটাই কি উচিত ছিল না?
.
..
আসুন চিকিৎসা ক্ষেত্রে।
সন্দেহ নেই চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক অগ্রগতি অর্জন করছে। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি বলছে অগ্রগতি এখনো যথেষ্ট নয়।
.
২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারী মাসের এক জরিপ মতে দেশে প্রতি হাজারে শিশু মৃত্যু হার ৫৩ জন। ৬৮.৩% প্রসবই হচ্ছে সম্পূর্ণ অদক্ষ কারো হাতে। অসুস্থ মানুষের মাত্র ১৬.২% মানুষ কোন পাশ করা ডাক্তার থেকে সেবা নিতে পারছেন। ৩৬% শিশু কম ওজন নিয়ে জন্ম নিচ্ছে। ৪১% শিশু এবং ৪২% নারী ভুগছে রক্তস্বল্পতায়। পাঁচ বছরে কম বয়সী গ্রাম্য শিশু হাজারে মারা যাচ্ছে ৮৫ জন।
এত উদ্যোগের পরও ১২% শিশু টিকাদান কর্মসূচীর আওতায় আসতে পারছে না।
.
সহজ সত্য, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে এখনো অনেক দূর যাওয়া বাকি।
দেশের মানুষকে এই কন্ডিশনে রেখে মহাকাশে কতটা ভালো থাকবে "বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট"?
.
..
মানছি বছরে ১০০ কোটি টাকা দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। কিন্তু সেটা ৩০০০ কোটিতে যেতে ৩০ বছর দরকার। এই ৩০ বছরে ৩০০০ কোটি টাকা পোশাক শিল্প বা অন্য কোন খাতে ব্যয় করলে এরচেয়ে বেশি লাভ অর্জন করা সম্ভব।
.
মাত্র ১৫% সাফল্যের সম্ভাবনা এবং বেশ কিছু "হয়তো" "কিন্তু" "যদি এমন হয়" ইত্যাদি অব্যয়যোগে গরীবের ৩০০০ কোটি টাকা মহাকাশে উড়াতে আমি রাজি নই।
এই উচ্চবিলাসী প্রজেক্টের যোগ্য আমরা এখনো হতে পারি নি বলেই আমার মনে হচ্ছে।
আমার দেশের ৩০০০ কোটি টাকার কেবল লোহা লাক্কড় ভাঙ্গাড়ী হয়ে মহাকাশে ভেসে বেড়ানোর সম্ভাবনা ৮৫%- এটা মানতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।
.
তারপরও আমি আশা করি কেউ বলুক আমি ভুল। আমার উদ্বেগের প্রতিটি পয়েন্ট কেউ যুক্তিখন্ডন করুক। কেউ স্বপ্ন দেখাক। কেউ বাস্তব পয়েন্ট ধরে বলুক এই স্যাটেলাইট আমাদের জন্য আশীর্বাদ।
দুঃখের ব্যাপার সমস্ত গুগল-ফুগল-ব্লগ ঘেটে আমি এ ব্যাপারে কোন আশা দেখছি না।
.
ঐতিহাসিক কিন্তু অন্ধকারে রাখা এই স্যাটেলাইট সামনের বছরের বিজয় দিবসে উড়ছে।
আমাদের জন্য আশা নিয়ে আসছে নাকি অন্ধকার নিয়ে আসছে সেই প্রশ্নের জবাব আমরা কেউ দিতে পারব না।
কেবল নাম কামানো নাকি দূরদর্শী পরিকল্পনা তার উত্তরও কেউ জানি না।
তাহলে জানে কে??
.
সময়।
সময় সব প্রশ্নের উত্তর দেবে।
আপাতত অপেক্ষা......
.
ধন্যবাদ সবাইকে।
ভালো থাকুন আপনারা। ভালো থাকুক গরীব মায়ের ঘরে অস্বাস্থকর পরিবেশে জন্ম নেয়ার অপেক্ষা করা একমাত্র স্যাটেলাইট। ভালো থাকুক আপনার আমার মতো গরীবের ঘাম ঝরানো ৩০০০ কোটি টাকা.....
.
লেখক: জয়নাল আবেদীন
১৮.০৬.১৬
.
তথ্যসূত্রঃ
*NASA
*UNOOSA
*Wikipedia
*Satelite debris website
*Union of Concerned Scientists
*SPARSOO
*Indian Space Researce Org.
*New York Times
*BTRC
*The Intergovermental Pannel of Climate Changed
*The scientefic Committee on Entertic Researce
*Bangladesh Health Association
*
দৈনিক ইত্তেফাক (১১-১১-১৫)
*
দৈনিক প্রথম আলো (১১-১১-১৫/১৫-১-১৫/৩-৯-১৫)
*
দৈনিক যুগান্তর (১১-১১-১৫)
*
দৈনিক কালের কন্ঠ (১২-১-১৬)
*
বিডিনিউজ২৪.কম... (৩-৯-১৫)
*
দৈনিক সংগ্রাম (২২-১০-১০)
*
দৈনিক ইনকিলাব (২০-৮-১৪)
*
চ্যানেল 24
*
চ্যানেল নাইন
*
৭১ টিভি
*
সময় টিভি


No comments:

Post a Comment

Receive All Free Updates Via Facebook.

Blogger Widgets..

Receive All Free Updates Via Facebook.

Receive All Free Updates Via Facebook.