১ম দিনঃ বৃহত্তর ময়মনসিং অঞ্চল সাইক্লিং ট্যুরঃ Day-1: ঢাকা থেকে জামালপুর...
বিস্তারিত এই লিঙ্ক এ
২য় দিনঃ
ঘুম থেকে উঠেছিলাম ফজরের নামাজ এর সময়।
ফ্রেশ হয়ে সব কিছু ঠিক ঠাক করে বের হয়ে পড়ি শেরপুর এর দিকে। ব্রহ্মপুত্র নদীর উপরে
দেখি সেদিনের সূর্যোদয়। একটা ইজি বাইকের পিছে ড্রাফটিং করতে করতে পৌঁছে যাই শেরপুর
এ। মানুষজনের কাছে ডিরেকশন নিয়ে চলা শুরু করি শ্রীবরদি এর দিকে।
এদিনের সূর্যোদয় |
খেতে খেতে পাশের লোকজনের কথা শুনলাম,
পলিতিক্স নিয়ে কথা বলতেছে। কথা শুনে মনে হল আমার এলাকার হতে পারে, জিজ্ঞেস করে
জানলাম আসলেই তাই। পঞ্চগড় এর, আর আমাদের লালমনিরহাটেও নাকি কাজ করেছে আড়াই বছর। তারপরে আমার এরকম সাইক্লিং এর কথা শুনে তো সেই লেভেলের
অবাক... :D
যাই হোক, এরকম কিছু অবাক মানুষ রেখে চলা
শুরু করলাম শ্রীবরদি এর দিকে... শেরপুর থেকে স্রীবরদি পর্যন্ত রাস্তা অনেক পেইন
দিছে... L রাস্তা অনেক বেশি রকমের খারাপ। এরপরে
বকশিগঞ্জ পর্যন্ত তো আরও বেশি রকমের খারাপ। L এতো বেশি রকমের খারাপ যে এভারেজ ২১ থেকে
কমে ১৯ এ চলে এসেছিল। L
যাইহোক, এখানে একটু নাস্তা করি, এরপর চলে
যাই কালাম্পুর এর দিকে, প্ল্যান ছিল কালাম্পুর হয়ে লাউছাপড়া ট্রেইল এ যাব, কিন্তু
পরে লোকজনের কথা শুনে সরাসরি লাউছাপড়া তে পৌঁছে যাই। আর এরপরেই শুরু হয় আমার মেইন
অ্যাডভেঞ্চার। J
একেবারে পাহারি গ্রাম্য মেঠো পথ ধরে আমার
সাইক্লিং... একদম নির্জন পথে সাইক্লিং করতে কিছু ভয় পেলেও চারদিকের ওপাড় সৌন্দর্য
দেখতে দেখতে যাচ্ছিলাম বলে খুব একটা কিছু মনে হয় নাই... আর সাহসের কথা হল কিছুক্ষন
পরপর মানুষজনের দেখা বুকে সাহস জোগাচ্ছিল। :D
এই বাসাতেই ব্যাগ রেখে হাতি দেখতে গেছিলাম... |
আমার প্রশ্ন, শুধু বাংলাদেশ এ আসে কেন?
-“আরে ভাই অপারে গারো দের পরিবারের সবার হাতে বন্দুক, এই ভয়েই ত অদিকে
নামে না। আর আমাদের লাঠি মশাল আর টিনের ক্যান এর শব্দ। ”
যাক এরপর এক
চাচাকে বুঝায়া ম্যানেজ করে গহিন পাহাড়ে গেছিলাম। হেটে গেছিলাম বলে এন্ডোমন্ডো তে
ট্রেকিং নাই। হাতি চলাচলের পথ
দেখলাম আর হাতি দেখব না, তা ত হয় না...!!! অনেক করে ধরলাম সেই চাচাকে...
চাচা কিছুতেই যাবেন না... আর আমিও ছাড়বো না। শেষে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইলিং করায় রাজি
হলেন... শর্ত দিলেন সাথে কিছুই নেওয়া যাবে না... কারণ যেকোনো সময় দৌড় দিতে হতে
পারে, বুনো হাতি দেখে বা বিজিবি দেখে...
তিনজনে মিলে
বল্লম , লাঠি আর টিনের ক্যান হাতে গহীন পাহাড়ে জংলের মাঝে গাছে উঠে বহু দুর
থেকে বুনোহাতি দেখে তবেই শান্তি পাইছি। আমাদেরকে হেটে হেটে প্রায় ইন্ডিয়া এর
বর্ডার এর কাছে যেতে হয়েছিল... হাতির পাল এর আভাস পেয়ে গেছে উঠতে হয়েছিল, অনেক উচা গাছে
উডেছিলাম। গ্রামের ছেলে। :D একটা ছোট্ট পাল দেখতে পাইছিলাম। ৮ টা হাতি ছিল, বহু
দূর থেকে গুনে দেখেছি, অবশ্য গহীন জঙ্গলের আড়ালে আরও কিছু থাকা অসম্ভব কিছু না...
আর নিজেদের নিরাপত্তা এর জন্যই ব্যাগ, মোবাইল, ক্যামেরা রেখে
গেছিলাম। যদি দৌর দিতে হয়, এজন্য। এদিকে আবার বিজিবি কেও ফাকি দিয়ে যেতে
হইছে।
ঘন্টা খানেকের বেশ বড় adventure... যাক, মনের খায়েস পুরন
হইছে।
এভাবেই ধীরে ধীরে পৌঁছে যাই গজনী অবকাস
কেন্দ্রে...
#গজনী এর এই #জলকন্যা কে #নিয়াজ ভাই গামছা
পরায়া শ্লীল করে ফুডু তুলেছিল, #ক্যাপসুল বস্ত্রহরণ করে ফুডু উডাইছিল, আর আমি....?
না, আমি কিছু করি নাই কিন্তু.... খালি এই ন্যাংটা জলকন্যা এর কোলে বসে,
পাশে
দারিয়ে, গলায় হাত রেখে, কাধে হাত রেখে, কোমড় এ হাত রেখে
ফুডু উডাইছি।
পাশের হোটেল এর
একজন তুলে দিছিল, যার এক হাতে পোলিও এর সমস্যা আছে। যারা এখানে এসেছেন, তাকে চিনবেন আশা
করি। #গজনী
ঘুরে দেখে বেশ ভাল লেগেছে, বিশেষ করে watch tower এ উঠে।
তো এক স্কুলের ৪
জন ছাত্র আমার ফ্যান হয়ে যায়, তারা আমাকে শর্টকাট এ ঘুরিয়ে দেখাচ্ছিল,
আর watch
tower এ
উঠে সেই অবস্থা...
এক ছেলে আর মেয়ে
#বিব্রতকর
অবস্থায় ধরা পরল আমাদের হাতে।
এটা দেখে এই চার ছেলে খুব উত্তেজিত, মাইর লাগায় কি
এই করে... আমি তাদের থামালাম...
"ভাই, আপনি খালি বলেন কি করতে হবে, সেটাই করব এই
দুইটারে..." (আমার ফ্যান বলে কথা , গর্বে বুকটা ফুলে গেল)
খুব ভাব নিয়া জিজ্ঞেস করলাম, "দুজন দুজন কে
ভালবাস?
- হ্যা ভাই
- পরে বিয়ে করার ইচ্ছে আছে?
- হ্যা ভাই।
আমি এরপর আমার ভক্তদের দিকে তাকায়া বললাম, "অই, তাইলে লোকজন ডাক,
দুইটারে
বিয়া করায়া দেই, এখন যেটা নাজায়েজ, বিয়ের পরে সব জায়েজ হবে"
ভক্তদল সেই খুশি।
সাথে সাথেই দুইটায় হাইমাউ করে কান্নাকাটি, ছেলে ত পায়েই
পরে।
-এই তোমাদের ভালবাসা? বিয়ের কথাতেই ফুস করে উড়ে গেল, ছি....!!! তোমরা
যেটা করছ তার নাম ভালবাসা না, এর নাম #দেহভোগ। এই যে
আপু তুমি...!!! নিজেকে এত সস্তা করে ফেলছ কেন? একটা পতিতার
চেয়েও ত তমার দাম কম করে ফেলেছ। সে ঘন্টা রেটে দেহ বিলায়, তুমিও। সে নগদ
টাকা নেয় আর তুমি প্রতি মিনিট ২৯ পয়সা সেটে কথা বল ফোনে। তোমার রেট মাত্র ১৮ টাকা
প্রতি ঘন্টা। বিশ্বাস হয়?"
আর ছেলেটাকে, "তোমার বোন নাই? চিন্তা কঅররে
দেখ ত তোমার বোনও এরকম করতেছে কারো সাথে... কেমন লআআগে? আর এর সাথেই যে
তমার বিয়ে হঅঅবে এটা কেমন করে জান?"
এরপরে আরো বহু
বুঝাইয়া ছেড়ে দিছি। শেষ এ দুজনেই কেদে ফেলেছে, তবে সেটা ভয়ে বা
দুশ্চিন্তায় না। ধরা পড়ার সময় যখন
কেঁদেছিল তখন সেটা ছিল ভয়ের আর শেষেরটা ছিল #অনুতাপের।
ফলাফল আরো দুইটা
ফ্যান বারল। দুইজনই আমার নাম্বার নিয়ে রাখল, বিয়েতে নাকি
দাওয়াত দিবে। আমিও কথা দিছি যে আসবো তাদের বিয়েতে।
বড়ই পেরে খেয়েছিলাম... :D |
জঙ্গল পেয়েই
একটা ভুল করে ফেলি, একটা ভুল রাস্তা ধরে চলি, দেখি যে এক্কেবারে ২০/৩০ ফুট সামনেই
ইন্ডিয়ান কাটা তারের বেড়া। :/ বেশ ভয় পাইছিলাম, সাথে সাথেই চলে আসি আবার সেই
পুরানো রাস্তায়, আসলে ভুল করার কথা ছিল না, ভুল করার কারণ হল মেইন রাস্তাটা একটু
বেশি খারাপ ছিল। :D
রাস্তা এতো
খারাপ যে বলার মতো না... ভিডিও করতে
গেছিলাম, কিন্তু ক্যামেরা মাউন্ট থেকে বারবার খুলে জাচ্ছিল বলে সেটা আর করা হয়ে
উঠে নাই। যাই হোক, এখানে একটা উল্লেখযোগ্য ঘটনা এর কথা বলতেই হয়... হালুয়াঘাট এর
বহু আগে এক্কেবারে বর্ডার ঘেঁষে নির্জন জঙ্গল ধরে সাইক্লিং করতে করতে কিছুটা আনমনা
হয়ে গেছিলাম, ডাউনহিল মারতেছিলাম, এমন
অবস্থায় ২০/৩০ ফিট দূরে একটা মোড় ঘুরতেই হুট করে দেখি রাস্তা ভাঙ্গা। ৬/৭ ফিট এর
মতো গর্ত রাস্তা জুড়ে।
চেষ্টা করলাম
সাইকেল থামানোর জন্য, কিন্তু ডাউনহিল এর জন্য স্পীড ছিল বেশ, এজন্য কন্ট্রোল করতে
পারলাম না। সাইকেল শুধুমাত্র সামনের চাক্কার উপরে ভর দিয়ে চলে গেল গর্তের একেবারে
ধারে, এমন সময় আর উপায় না দেখে সাইকেল ছেড়ে দিয়ে আমি একপাশে লাফ দিই। সাইকেল গড়তে
আর আমি গর্তের ধারে কিছু গড়াগড়ি খেলাম। তেমন কিছু হয় নাই, সাইকেলেরও কিছু হয় নাই,
(অবশ্য সেদিন সন্ধ্যায় টের পাইছিলাম যে হেডলাইট নষ্ট হয়ে গেছিল।) পরে সব কিছু
ঝারাঝারি করে ঠিক হয়ে মবাইল হাতে নিয়ে দেখি সেটা অফ, অন করার চেষ্টা করেও পেলাম
না। L একে তো এরকম
নির্জন জঙ্গল এ এরকম একটা এক্সিডেন্ট তার উপরে মোবাইল অফ... বেশ বড়সড় একটা শক...
এ সময় আবার চলা
শুরু করি, একটা লোকালয় পেয়ে সেখানে মোবাইল খুলে ঠিক করে আল্লাহ এর ওয়াস্তে অন করে
দেখি, অন হল... J
আলহামদুলিল্লাহ...!!!
#বুরং নামের এক যায়গায় এটা দেখে আর লোভ সামলাইতে পারি নাই। আমার গোসল
করা দেখে মসজিদ এর ইমাম বাসা থেকে সাবান এনে দিল, শ্যাম্পু এবে দেখে মাথায় চুল নাই।
বহু দিন পর #কস্কো সাবান দিয়ে গোসল করলাম। এক্সিডেন্ট এর ধুলাবালি থেকে ফ্রেশ হইছিলাম।
লোকজনের কাছে
শুনি পাশেই একটা ল্যান্ড পোর্ট। নাকুগাও ল্যান্ড পোর্ট। পাশেই বলে সাথে সাথেই চলে
যাই... ইন্ডিয়া এর বর্ডার এ গিয়ে পিক উথাব, কিন্তু বিজিবি দিবে না, পরে পরিচয় দিয়ে
সব যখন বললাম তখন তারা পিক তো তুলতে দিল দিল এমনকি আমাকে একেবারে ইন্ডিয়া এর ভিতরে
পর্যন্ত নিয়ে গেছিল। ^_^ অবশ্য আরেকটা
কারণ ছিল, এক বিজিবি সদস্য এর বাসা ছিল পঞ্চগড় এ, আর আমি বলেছিলাম আমার দাদার বাসা
পঞ্চগড় এ। ;) :D
যাই হোক, এখানেই
এসে অনেক ক্ষণ পরে পিচ রাস্তা এর দেখা পাইছি। ^_^ ভেবেছিলাম কষ্টের রাস্তা মনে হয় শেষ, কিন্ত কিসের কি? সবে তো
শুরু...!!! হালুয়াঘাট থেকে ধোবাউরা পর্যন্ত রাস্তা পিচ ছিল ঠিকই, কিন্তু সংস্কার
করতেছে বলে পুরা রাস্তা জুড়ে খোরাখুরি আর বালু। L অনেক কষ্ট করে ধোবাউরা
পৌঁছেই দুই কাপ চা মেরে দেই... এরপরে অবশ্য পিচ পেয়েছি। ততোক্ষণে সন্ধ্যা নামতে
শুরু করেছে... শেষ বিকেলের আলোয় আমিও ছুটে চলেছি।
একজায়গায় এসে রাস্তা ভুল করে
প্রায় ১.৫ কিমি. এর মতো চলে যাই, পরে আবার ফিরে এসে চলতে চলতে দুর্গাপুর এ প্রবেশ এর আগে একটা সবুজ
পানির লেক পাই... তখনো শেষ বিকেলের আলো ছিল। সেখানে পিক তুলে ছুটে চলি দুর্গাপুর
এর দিকে। তখনো ২২ কিমি. এর মতো বাকি আছে, মানে ১ ঘণ্টার পথ... লাইট বের করে তখনই
টের পেলাম যে এক্সিডেন্ট এর ফলে সেটা গেছে। L বাধ্য হয়ে
অন্ধকারে এচলতে থাকি... ভাগ্য ভালো যে আকাশে তখন চাঁদ ছিল পূর্ণ। J তার আলোতেই
ঘাটে এসে পৌঁছে যাই। চাদের আলোয় পথ দেখে দেখে চলে আসি দুর্গাপুর এ।
দুর্গাপুর এর আগে সবুজ পানির লেক... |
এসেই ডাকবাংলো
এর খোঁজ করি, কিন্তু কোন শীত ফাকা ছিল না ভলে বাধ্য হয়ে হোটেলে উঠতে হয়। হোটেলে
উঠে ফ্রেশ হয়েই খাইতে বের হই। এতো বেশি খুদা লেগেছিল যে বলার মতো ছিল না... সেই
সকালের ভুনা খিচুরি এর পরে পেট এ ভাত আর পরে নাই... সো পরিচিত জনেরা ভালো বলতে
পারবে এরপরে কি ঘটেছিল হোটেল এ... :D
এক বসাতেই
হোটেলে ৫ প্লেট ভাত, দুই প্লেট মাছ (নামটা মনে নাই, সোমেশ্বরী এর মাছ এটা মনে
আছে), আর একটা ডিম সিদ্ধ খেয়ে ঘুমাতে যাই। J
______________________________
১ম দিনঃ বৃহত্তর ময়মনসিং অঞ্চল সাইক্লিং ট্যুরঃ Day-1: ঢাকা থেকে জামালপুর...
বিস্তারিত এই লিঙ্ক এ।
ময়মনসিং অঞ্চল সাইক্লিংঃ৩য় ও ৪র্থ দিনঃদুর্গাপুর-সুসং-চীনামাটিরদেশ ঘুরে ময়মনসিং-কিশোরগঞ্জ-নরসিংদী হয়ে ঢাকা
ময়মনসিং অঞ্চল সাইক্লিংঃ৩য় ও ৪র্থ দিনঃদুর্গাপুর-সুসং-চীনামাটিরদেশ ঘুরে ময়মনসিং-কিশোরগঞ্জ-নরসিংদী হয়ে ঢাকা
________________________________________________________________________
Thanks...
====>
Always feel free to SHARE so
that your friends can can know these informations. Keep
visiting this blog site for
more. U
also can submit your email to SUBSCRIBE
this blog.
Thanks
again. :)
khub valo hoyeche lekha, ovinondon agami vromoner jonno.
ReplyDeleteথ্যাংকস :)
Delete