আসলে দেখতে
দেখতেই কেমন জানি চলে যাচ্ছেন বড় ভাইয়ারা...
মনে হচ্ছে এই তো সেদিন আমরা হলে আসলাম, ৩৫তম ব্যাচের বড় ভাইদের রুমে ছিলাম, গন রুমে উঠার আগে। আর সেই বড় ভাইয়ারাই
আজকে চলে যাচ্ছেন। আসলে অনেকেই ইতিমধ্যে জব শুরু করে দিছেন, অনেকেই চলে গেছেন, অনেকে চলে যাবার পথে হল থেকে...
মনে হচ্ছে এই তো সেদিন আমরা হলে আসলাম, ৩৫তম ব্যাচের বড় ভাইদের রুমে ছিলাম, গন রুমে উঠার আগে। আর সেই বড় ভাইয়ারাই
আজকে চলে যাচ্ছেন। আসলে অনেকেই ইতিমধ্যে জব শুরু করে দিছেন, অনেকেই চলে গেছেন, অনেকে চলে যাবার পথে হল থেকে...
আসলে জীবনটা
এরকমই... দেখতে দেখতেই চলে যেতে হচ্ছে...
৩৫তম ব্যাচের
প্রতি আমার কেন জানি এক ধরনের দুর্বলতা আছে... আমাদের বুটেক্স এ ভর্তির আগে থেকেই
ইভেন কোচিং করার সময় থেকেই আমি আমাদের এই ওসমানী হলে আসতাম। ১০০৩ নম্নর রুমে।
সেখানে থাকতো আমাদের ৩৫তম ব্যাচের বড় ভাইরা। সেই সুবাদে এখানে ক্লাস করা তো দুরের
কথা ভর্তির আগে থেকেই এই ব্যাচের বড়ভাইদের সাথে আমার একটু হলেও খাতির জমে গেছিলো।
কোচিং করার সময় থেকেই মাঝে মাঝে আসতাম হলে, তাদের সাথে আড্ডা দিতাম, এক সাথে বসে
বসে মুভি দেখতাম, কখনো কখনো কার্ড খেলা দেখতাম(তখন পর্যন্ত শিখি নাই এই খেলাটা। :D
)
তারপর বিভিন্ন
জায়গায় যখন ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে বেড়ালাম তখন আমার সকল ব্যাগ, বাক্স এই হলেই ছিল এই
ব্যাচের বড় ভাইদের কাছে, বুটেক্স এ ভর্তি পরীক্ষার সময়েও এই ব্যাচের বড় ভাইদের রুমেই
ছিলাম আমি আর আমার ফ্রেন্ড @ariful । এই বড়
ভাইরাই আমাকে সাহস জুগিয়েছিল। আবার এই বড় ভাইদের কাছ থেকেই আমি বুটেক্স এর ভর্তি
পরীক্ষার রেজাল্ট পেয়েছিলাম। মিষ্টিও তাদেরকেই আগে খাইয়েছিলাম। তারপর ভর্তির সময়েও
এই বড় ভাইদেরকেই জালাইছি, তাদের রুমে থেকেই ভর্তি হয়েছিলাম, গন রুমে উঠার আগে
পর্যন্ত তাদের রুমেই ছিলাম আমি, তাদের পিসি ইউজ করতাম। তারপর গন রুমে উঠার সময়ে
শুধুমাত্র আমার ব্যাগ বান্ডিল ১০০৩ নম্বর রুম থেকে নিয়ে গিয়ে উঠেছিলাম।
1003 এর কয়েক বড় ভাই... |
সেই বুটেক্স এ
ভর্তির আগে থেকেই এই ব্যাচের বড় ভাইদের সাথে পরিচয় বলে তাদের সাথে কেন জানি গড়ে
উঠেছে এক ধরনের নাড়ির টান...
আমি যখন এই
পোস্টটা লিখতেছি তখন বাইরে প্রচণ্ড ঝর বৃষ্টি হচ্ছে, কাব্যিক চিন্তা চেতনা থাকলে
এতক্ষণে হয়তো একটা কবিতা লিখেই ফেলতাম, কিংবা বলতাম বড় ভাইদের জন্নই এই বৃষ্টি।
আর কেন জানি
বিষণ্ণ বিষণ্ণ কথা লিখতেছি... ধুর...!!!
আসো জেনে নেওয়া
যাক আমাদের বুটেক্স এর র্যাগ ডে তে আসলে কি ঘটে...
এদিনে বড়
ভাইয়ারা সকালে উঠেই প্রথমে ক্যাম্পাসে একত্রিত হন, তারপর শুরু হল রঙ এর হোলি
খেলা... যে জাকে যতটা পারে রঙ মাখায়। ছেলে মেয়ের ভেদাভেদ নাই। চারদিকে শুধু রঙ আর
রঙ... রঙ মেখে একেকজন ভুত এর মতো হয়। এর হাত থেকে জুনিয়র পোলাপানও রেহাই পায় না।
(গত ৩৪তম ব্যাচের র্যাগ ডে তে দেওয়া রঙ এখনও আমার পুরাতন সাইকেলে আছে :D )
তারপর কয়েকটি বড়
বড় ট্রাকে করে হেব্বি সাউন্ড সিস্টেম সহ ঢাকা শহর প্রদক্ষিণে বের হয় তাঁরা।
প্রথমেই সব গুলো হল এর মাঠে চক্কর মারা হয়, সেখানে জুনিয়রদের কেও রাঙ্গিয়ে দেওয়া
হয়, তারপর শহর প্রদক্ষিণ, শেষ হতে হতে দুপুর, তারপর ক্যাম্পাসে আরেক দফা রঙ এর
খেলা... :D
এরপরে তাদের
জন্য কিছু খানাপিনার ব্যাবস্থা থাকে। তারপর সবাই নিজ নিজ বাসায় চলে যায় নিজেকে
মানবিক রুপে ফিরিয়ে আনতে ও কিছুটা রেস্ট নিতে।
এরপর সন্ধ্যা
থেকেই শুরু হয় কনসার্ট। আমাদের বুটেক্স এর ব্যান্ড থেকে শুরু করে লোকাল ব্যান্ড
আসে। তারপর ছোটোখাটো কিছু ব্যান্ডও থাকে। তবে সবচেয়ে বড় চমক থাকে সব শেষে। এইবারের
চমক হচ্ছে “লালন ব্যান্ড” আসছে আমাদের বুটেক্স এ... :D
আর এই কনসার্ট
এর সময়ে আমাদের পুরা অডিটোরিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ থাকে। বিসেস করে বিদায়ী ভাইয়া
আপুরা। সাথে আমরা জুনিয়ররাও থাকি। উপভোগ করি বড় ভাইদের শেষ আনন্দের দিন এই
ক্যাম্পাসে। তাদের সেই উদ্দাম আনন্দে মাঝে মাঝে আমরাও শরিক হয়ে পরি, আমরাও তাদের
সাথে নেচে নেচে ক্যাম্পাস কাঁপিয়ে দেই...
মাঝে মাঝে আনমনে
ভাবি, একদিন এভাবে আমাদেরও সময় আসবে, আমরাও এভাবে একদিন শেষ বারের মতো কাঁপিয়ে দিব
আমাদের বুটেক্স কে, তারপর আমরাও চলে যাব প্রানের এই বুটেক্স ছেড়ে।
যাই হোক, প্রতি
র্যাগ ডে তেই আমরা সকলেই অনেক অনেক অনেক বেশি মজা করি...
অনেকেই ক্লাস
হবে না ভেবে আসে না, বা বাসায় চলে যায়, তাঁরা কিন্তু আসলেই এই ব্যাপার গুলা মিস
করে ফেলে। আমাদের সকলেরি উচিত আমাদের বড় ভাইদের র্যাগ ডে তে ক্যাম্পাসে আসা, বড়
ভাইয়াদের শেষ দিনটিকে একটু রঙ্গিন করে রাখতে সাহাজ্জ করা। আমরা যদি এই দিন
ক্যাম্পাসে না আসি তবে পুরা ক্যাম্পাস ফাকা ফাকা হয়ে থাকবে, বড় ভাইয়ারাও নিজেরা
নিজেরা আর কতই বা মজা করবে যদি আশেপাশে দেখার মতো কেউ না থাকে? ঠিক গতবারে(৩৪তম
ব্যাচের সময়) এরকম হয়েছিল। অন্য সকল ব্যাচ ক্যাম্পাসে আসে নাই, আর বড় ভাইয়ারা
নিজেরা নিজেরাই মজা করেছে, অবশ্য আমি ছিলাম। তখন কথা প্রসঙ্গে এক বড় ভাই বলেছিলেন,
“জুনিয়ররা আমাদের শেষ দিনে নাই, বড়ই আফসোসের ব্যাপার।” তার আক্ষেপ দেখে আসলেই অনেক
খারাপ লেগেছিল সেদিন।
এজন্য সকলের প্রতি অনুরোধ, সকলেই আসিও। কথা দিচ্ছি, আসাটা তোমাদের বৃথা যাবে না। অনেক মজা হয়, যদি করতে পারো। বিশেষ করে বলতেছি নতুন ৪০তম ব্যাচ কে। তোমাদের জন্য কিন্তু এটাই প্রথম দেখা র্যাগ ডে হবে? তোমরা কি এটা মিস করতে চাও? পরে কিন্তু অনেক মিস করবা যদি না আসো তবে...
এজন্য সকলের প্রতি অনুরোধ, সকলেই আসিও। কথা দিচ্ছি, আসাটা তোমাদের বৃথা যাবে না। অনেক মজা হয়, যদি করতে পারো। বিশেষ করে বলতেছি নতুন ৪০তম ব্যাচ কে। তোমাদের জন্য কিন্তু এটাই প্রথম দেখা র্যাগ ডে হবে? তোমরা কি এটা মিস করতে চাও? পরে কিন্তু অনেক মিস করবা যদি না আসো তবে...
No comments:
Post a Comment