_________________________________________________________________________________
একবার আব্রাহাম লিংকনের কাছে এক ভদ্রলোক এসে বীরদর্পে বললেন-
-- আমার ছেলেকে রাষ্ট্রীয় উচ্চপদস্থ চাকুরি দিন...
-- আব্রাহাম লিংকন: কেন ?
-- ভদ্রলোক: আমার ছেলে চাকরি পাওয়ার যোগ্য তাই।
... -- আব্রাহাম লিংকন: কিসেরযোগ্যতা আছে আপনার ছেলের?
-- ভদ্রলোক: আমার বাবা (ছেলের দাদা) আমেরিকার জন্যস্বাধীনতা যুদ্ধ করেছেন;
আমরা আমেরিকার মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের বংশধর-তাই দেশ সেবার সেরা
চাকরি আমাদের দেয়া উচিৎ.....!
-- আব্রাহাম লিংকন: ওকে থাঙ্কস; আপনাদের পরিবার দেশের জন্য অনেক করেছে; এবার সাধারণ মানুষকে দেশের জন্য কাজ করতে দিন।
আমার প্রথম প্রশ্ন হল, কোঠা প্রথা কি মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান কম করে দিবে???
-কখনোই না। মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের এই বর্তমান দেশের জন্য নিজেদের
জীবনের ঝুকি নিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। তারা আমাদের দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের সম্মান করা আমাদের অবশ্যই কর্তব্য, সরকারেরও উচিৎ
তাদের যথাযথ সম্মান প্রদান করা।
এখন কথা হচ্ছে কোঠা প্রথায় তাদের সন্তান্দের জন্য এতো জায়গা রাখা কি ঠিক হচ্ছে? কিংবা আদৌ রাখা কি ঠিক হচ্ছে???
মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান আরও নানা ভাবে করা যায়, তাদের সন্তানদেরও আরও নানা ভাবে সিক্ষার জন্য সাহায্য করা যাবে।
প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কে একটি করে ফ্লাট বাসা দেওয়া হোক, তাদের প্রতিমাসে ১০০০০ টাকা করে দেওয়া হোক, তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য আলাদা খরচ দেওয়া হোক, তাদের টিউশন ফীস মউকুফ করা হোক...
আমাদের কোন আপত্তি নেই। কিন্তু তাই বলে বিসিএস এর মতো জায়গায় কেন এতো বিশাল পরিমানে তাদের জন্য কোটা এর বাবস্থা???
এই কোটা প্রথা বাতিলের দাবী এর মানে কিন্তু এই না যে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করতে হবে না। এর মানে হচ্ছে তাদের এই অন্যায় সুবিধা প্রথা বন্ধ করতে হবে।
মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য এমনিতেই কিন্তু সরকার কম সুযোগ সুবিধা দেয় নাই।
ভালো ভালো স্কুল কলেজে কিন্তু তাদের জন্য আলাদা ভাবে কোটা এর ব্যাবস্থায় তাদের ভর্তি করা হয়, সেখানে তারা আলাদা সুবিধা পেল, মানলাম এটা।
এরপর যখন বিশ্ববিদ্যালয় এ ভর্তির সময় এলো, তখনও তাদের জন্য কোটা এর বাবস্থা।
আমি আমাদের ভার্সিটি এর কোঠা বলি, ৪১০ টা সিট এর জন্য ১০০০০ পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়, তাদের মধ্যে থেকে সর্বশেষে যে ভর্তি হয় সে হল ১৫০০ তম, কিন্তু আমাদের এই মুক্তিযোদ্ধা কোটায় যারা ভর্তি হয়েছে তারা ৩০০০ তম পজিসন থেকে এসেছে। এ থেকে কি বুঝলেন...????????????
কেউ এতো কষ্ট করে পড়াশুনা করে ভর্তি পরিক্ষায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তাদের ছেয়েও ১৫/২০ মার্ক বেশি পেয়েও ভর্তি পেল না, আর কেউ কোটা এর মাধ্যমে অতি সহজেই ভর্তি হয়ে গেলো।
শুধু আমাদের ভার্সিটি তেই না, আমি জানি আর সকল ভার্সিটিতেও একই অবস্থা।
তাও আমরা মেনে নিছি...
কিন্তু এভাবে আর কতো?
এরপর যখন বিসিএস এর মতো ব্যাপার চলে আসে তখন আর মেনে নিতে পারতেছি না।
তাদেরকে(মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদেরকে) কিন্তু কম সুযোগ দেওয়া হয় নাই।
প্রথমে ভালো স্কুলে সবার আগে ভর্তি হতে সুযোগ দিছি, তারপরে সবাইকে পিছনে ফেলে ভালো ভালো কলেজেও ভর্তির সুযোগ দিছি, তারপরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির মতো একটা জায়গাতেও তাদের সুযোগ দিছি, তাদের সুযোগ দিতে দিতে আজ আমরা ক্লান্ত, আমরা রাগান্বিত।
এভাবে আর কতো...???
তাদের কে এতো ভালো ভালো জায়গায় পড়ার মতো সুযোগ দেবার পরেও যদি তারা তাদের মেধার সঠিক ব্যাবহার না করতে পারে তবে এর দায়ভার কে নিবে?
আমরা সাধারন ছাত্ররা কেন এর দায়ভার নিবো???? কেন????????
তাদের কি মেধা এতোই কম? এতোই কম যদি মেধা হয় তবে কি হিসেবে তারা সরকারি কর্ম কমিসনে কাজ করবে?
কোন যোগ্যতায়?
আর তো আর ছেলেখেলা না।
এই কোটা প্রথা নিয়ে পিএসসি এর এক্সন সাবেক সদস্য এর কথা সুনেনঃ
পিএসসির সাবেক সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক[/si] বলেন, [sb]কোটা পদ্ধতি মোটেই যৌক্তিক না। আমি যখন পিএসসির সদস্য ছিলাম তখনো আমি এই পদ্ধতির বিরোধিতা করেছি। তখন দেখেছি একজন ছেলে মেধাতালিকায় ৭৫তম স্থান পেয়েও তার চাকরি হয়নি। অথচ একজন মেয়ে মেধাতালিকায় ২০৩২তম হয়েও প্রশাসনে তার চাকরি হয়েছে।
কি আজব নিয়ম !!!
can u believe it.................????????????????!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
কোথায় ৭৫তম আর কোথায় ২০৩২..................।!!!!!
এই হল অবস্থা......
পিএসসির সাবেক একজন চেয়ারম্যান ও একাধিক সাবেক সচিবের বিশ্লেষণ এবং অন্তত দুটি প্রতিবেদনের সুপারিশ পর্যালোচনা করে সরকারি চাকরির কোটাব্যবস্থা নিয়ে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) পক্ষে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলি খান ও বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দীন আহমেদ যৌথভাবে কোটাব্যবস্থা সংস্কারে কিছু সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন দেন। তবে তা এখনো ফাইলবন্দী হয়ে আছে। সুপারিশে কোটা পদ্ধতি সংস্কার করে একে সহজ করার কথা বলা হয়।
সর্বশেষ ২০১১ সালে পিএসসির বার্ষিক প্রতিবেদনেও কোটাব্যবস্থার প্রয়োগ করা জটিল উল্লেখ করে বলা হয়, প্রচলিত কোটা পদ্ধতির কারণে উপযুক্ত প্রার্থী নির্বাচন শতভাগ নিখুঁতভাবে করা সম্ভব নয়। বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে উপযুক্ত প্রার্থী মনোনয়নের জন্য বর্তমানে প্রচলিত কোটা পদ্ধতির সরলীকরণ অপরিহার্য। অন্যথায় কোটা প্রয়োগসংশ্লিষ্ট জটিলতা থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।
বর্তমানে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে একেক দপ্তরে একেক রকম কোটাব্যবস্থা আছে। বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া প্রথম শ্রেণীর চাকরিতে ৫৫ শতাংশ বিভিন্ন কোটা ও ৪৫ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হয়। কোটার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান কোটা ৩০ শতাংশ, জেলা কোটা ১০ শতাংশ, নারী কোটা ১০ শতাংশ ও উপজাতি কোটা ৫ শতাংশ। এ ছাড়া ১ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা থাকলেও না পাওয়া গেলে মেধা কোটা থেকে পূরণ করা হয়।
আবার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যান্য কোটার পাশাপাশি ৬০ শতাংশ নারী কোটা আছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা। নিচের স্তরের পদগুলোতেও ভিন্ন ব্যবস্থা।
অনেকের অভিযোগ, কোটার কারণে কম মেধাবীরা বেশি চাকরি পাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে কোটার সুফলও পাওয়া গেছে। যেমন—প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নারী কোটায় শিক্ষক নিয়োগের ফলে বিদ্যালয়গুলোতে শিশুদের জন্য তুলনামূলক অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তাঁদের মতে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে কোটা থাকা উচিত, কিন্তু এর প্রয়োগ পদ্ধতি সহজ করতে হবে।
পিএসসির সাবেক একজন চেয়ারম্যান প্রথম আলোকে বলেন, বিদ্যমান কোটাব্যবস্থায় বৈষম্য তৈরি হয়। যেমন—কোনো একজন প্রার্থীর বাড়ি টাঙ্গাইলে। তাঁর মেধাক্রম ১৭। কিন্তু ওই জেলায় কোটায় নেওয়া যাবে তিনজন। ১৭ পর্যন্ত যাওয়ার আগেই যদি টাঙ্গাইলের কোটায় তিনজন পাওয়া যায়, তাহলে ১৭তম হয়েও চাকরি পাবেন না। বিপরীতে ১৪২তম হয়েও মেহেরপুরের একজন প্রার্থী কোটা খালি থাকলে চাকরি পেয়ে যেতে পারেন।
এ বিষয়ে আকবর আলি খান বলেন, যখন জেলা কোটা চালু হয়েছিল, তখন জেলা ছিল ১৯টি। এখন ৬৪টি। অথচ কোনো কোনো নিয়োগে ৬৪টি পদই থাকে না। তিনি বলেন, বর্তমান ব্যবস্থায় যে জেলায় জনসংখ্যা বেশি, সেই জেলা থেকে লোক নেওয়া হয়। কিন্তু কম জনসংখ্যা অধ্যুষিত এলাকার একজন প্রার্থী ভালো করলেও বাদ পড়ে যেতে পারেন।
পিএসসির একজন সাবেক চেয়ারম্যান নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, [sb]বেশির ভাগ সময় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় পদ খালি থাকে। প্রার্থী পাওয়া যায় না। কিন্তু সংরক্ষিত রাখার কারণে এই পদগুলোতে অন্যদেরও নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয় না। বিশেষ করে কারিগরি পদগুলোতে বেশি সমস্যা হয়। সম্প্রতি এ জন্য ৩২তম বিসিএসের মাধ্যমে আলাদা করে কারিগরি পদে লোক নিতে হয়েছে। তিনি বলেন, কোটা নিয়ে অনেক সমস্যা থাকলেও মূলত ‘স্পর্শকাতর’ বিবেচনায় কোনো সরকার এই ব্যবস্থা সংস্কার করে না। এতে দিনে দিনে জটিলতা বাড়ছে।[/sb]
সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার মনে করেন,[sb] বিদ্যমান কোটাব্যবস্থা অবশ্যই সংস্কার হওয়া উচিত। সংবিধান অনুযায়ী, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা থাকা উচিত। তাও সব মিলিয়ে ২০ শতাংশের বেশি থাকা উচিত নয়।[/sb]
জানতে চাইলে জনপ্রশাসনসচিব আবদুস সোবহান সিকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখনো সংস্কারের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেই। তবে ভবিষ্যতে হয়তো সংস্কারের বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হতে পারে।’
অনেকেই দেখি ভারতের কোঠা প্রথা এর কোঠা বলতেছেন। আমরা কথায় কথায় ভারতের নজির দেখাই। ভারত ব্রিটিশ থেকে প্রাপ্ত তার চাকরি কাঠামোগুলোকে বিবেচনাহীনভাবে বিপন্ন করেনি। অনুন্নত সমপ্রদায়ের জীবনযাত্রার মানকে তারা উন্নত করে চলছে। পাশাপাশি অতি সীমিত সংখ্যায় সর্বভারতীয় ও রাজ্য পর্যায়ে প্রথম শ্রেণীর চাকরির ভিত্তি পদে নিয়োগে তাদের টেনে আনার কিছু ব্যবস্থাও করেছে। কিন্তু সেসব পদ এ ধরনের সর্বগ্রাসী কোটার বিপরীতে ছেড়ে দেয়নি। ১৯৭৯ সালে অনুন্নত সম্প্রদায়গুলোকে সরকারি চাকরিপ্রাপ্তি ও সরকার পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ইত্যাদি বিষয়ে বিবেচনার জন্য একজন সাংসদ বিপি মণ্ডলের নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠন করা হয়। উল্লেখ্য, ভারতের ৫৪ শতাংশ মানুষ অনগ্রসর শ্রেণীভুক্ত। মণ্ডল কমিশন ১৯৮০ সালে প্রদত্ত তাদের প্রতিবেদনে ৪৯ দশমিক ৫ শতাংশ চাকরি তাদের জন্য সংরক্ষিত রাখা আর একই অনুপাতে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন সংরক্ষিত রাখার প্রস্তাব করে। ভিপি সিং প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে এ সুপারিশ বাস্তবায়নের একটি প্রচেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন। দেশের সামগ্রিক দিক বিবেচনায় সচেতন ভারতবাসী, এ রিপোর্টটির বিপরীতেই অবস্থান নিয়েছিল। আর সে অবস্থান ছিল ভারতকে আধুনিক ও উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে মেধাকে প্রাধান্য দেওয়ার জন্য। এর সুফল আজ তারা ভোগ করছে।
কি বুঝলেন?
সরকার কি শুধু মাত্র এই কোঠা এর মাদ্ধমেই মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানাবে???
আর বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের ছেলে কি তবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান না????
বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের ছেলের জীবন কাটে চায়ের দোকানের পানি টেনে
বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের ছোট ছেলে শওকত আলী পাটোয়ারী। বাবা বীরশ্রেষ্ঠ হলেও নিজে যেন হেরে যাচ্ছেন জীবনযুদ্ধে। দারিদ্র্র্যের সঙ্গে লড়াই করে স্ত্রী ও একমাত্র শিশুকন্যাকে নিয়ে কোনো রকমে বেঁচে আছেন শওকত। কখনো করাত কলে গাছ টেনে কখনো বা চায়ের দোকানের পানি টেনে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার বাগপাচড়া গ্রামে ১৯৩৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন। তাঁর দুই ছেলে তিন মেয়ের মধ্যে বড় ছেলে মো. বাহার প্রায় ১৪ বছর আগে মারা যান। তিন মেয়ে বিয়ের পর থেকে স্বামীর বাড়িতে বসবাস করছেন। ছোট ছেলে শওকত। স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন যখন শহীদ হন, তখন শওকতের বয়স দুই বছর। বর্তমানে ৪০ বছর বয়সী শওকত তাঁর বাবার ভিটেতেই আছেন। স্ত্রী রাবেয়া আক্তার (৩০) ও মেয়ে বৃষ্টিকে (৭) নিয়ে শওকতের সংসার। শওকত জানান, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম কাজ করে কোনো রকমে সংসার চালান। তিনি বলেন, ‘বাবা বীরদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন—সেই গর্বে সব দুঃখ, কষ্ট ভুলে থাকি।’ অর্থকষ্টের কারণে মংলা বন্দরে গিয়ে বাবার সমাধিটিও দেখার সৌভাগ্য হয়নি বলেই কেঁদে ফেলেন শওকত।
শওকতের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার বলেন, ‘এ ঈদেও নিজেরা কোরবান দিতে পারিনি। পাড়ার লোকজন যখন দুই-তিন টুকরা গোসত হাতে করে দিয়ে যান তখন কষ্টে বুক ফেটে যায়।’ তিনি অভিযোগ করেন, সরকারি সাহায্যও সেভাবে তাঁদের কাছে পৌঁছে না।
বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন জাদুঘর ও গ্রন্থাগারের সভাপতি আতাউর রহমান (৭৬) প্রথম আলোকে বলেন, এলাকাবাসীর সহায়তায় শওকত কোনো রকমে বেঁচে আছে। সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী আবদুর রহমান বলেন, শওকতকে সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান শুধু এই কোঠা দিয়েই হয় না। আশা করি বুঝতে পারেছেন।
মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানের এই কোঠা এমন আকার ধারন করেছে যে কিছু দিন পর হয় জাতীয় বিভিন্ন খেলা-ধুলা প্রতিযোগিতায় এমন হবে যে প্রথম স্থান রাখা হবে তাদের জন্য, আর বাকি ১ম আর ২য় স্থানের আমাদের প্রতিযোগিতা করতে হবে। :p :p
শেষে শুধু একটা কথাই বলতে চাই... কোঠা প্রথার অবসান করতেই হবে।
একবার আব্রাহাম লিংকনের কাছে এক ভদ্রলোক এসে বীরদর্পে বললেন-
-- আমার ছেলেকে রাষ্ট্রীয় উচ্চপদস্থ চাকুরি দিন...
-- আব্রাহাম লিংকন: কেন ?
-- ভদ্রলোক: আমার ছেলে চাকরি পাওয়ার যোগ্য তাই।
... -- আব্রাহাম লিংকন: কিসেরযোগ্যতা আছে আপনার ছেলের?
-- ভদ্রলোক: আমার বাবা (ছেলের দাদা) আমেরিকার জন্যস্বাধীনতা যুদ্ধ করেছেন;
আমরা আমেরিকার মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের বংশধর-তাই দেশ সেবার সেরা
চাকরি আমাদের দেয়া উচিৎ.....!
-- আব্রাহাম লিংকন: ওকে থাঙ্কস; আপনাদের পরিবার দেশের জন্য অনেক করেছে; এবার সাধারণ মানুষকে দেশের জন্য কাজ করতে দিন।
আমার প্রথম প্রশ্ন হল, কোঠা প্রথা কি মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান কম করে দিবে???
-কখনোই না। মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের এই বর্তমান দেশের জন্য নিজেদের
জীবনের ঝুকি নিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। তারা আমাদের দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের সম্মান করা আমাদের অবশ্যই কর্তব্য, সরকারেরও উচিৎ
তাদের যথাযথ সম্মান প্রদান করা।
এখন কথা হচ্ছে কোঠা প্রথায় তাদের সন্তান্দের জন্য এতো জায়গা রাখা কি ঠিক হচ্ছে? কিংবা আদৌ রাখা কি ঠিক হচ্ছে???
মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান আরও নানা ভাবে করা যায়, তাদের সন্তানদেরও আরও নানা ভাবে সিক্ষার জন্য সাহায্য করা যাবে।
প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কে একটি করে ফ্লাট বাসা দেওয়া হোক, তাদের প্রতিমাসে ১০০০০ টাকা করে দেওয়া হোক, তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য আলাদা খরচ দেওয়া হোক, তাদের টিউশন ফীস মউকুফ করা হোক...
আমাদের কোন আপত্তি নেই। কিন্তু তাই বলে বিসিএস এর মতো জায়গায় কেন এতো বিশাল পরিমানে তাদের জন্য কোটা এর বাবস্থা???
এই কোটা প্রথা বাতিলের দাবী এর মানে কিন্তু এই না যে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করতে হবে না। এর মানে হচ্ছে তাদের এই অন্যায় সুবিধা প্রথা বন্ধ করতে হবে।
মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য এমনিতেই কিন্তু সরকার কম সুযোগ সুবিধা দেয় নাই।
ভালো ভালো স্কুল কলেজে কিন্তু তাদের জন্য আলাদা ভাবে কোটা এর ব্যাবস্থায় তাদের ভর্তি করা হয়, সেখানে তারা আলাদা সুবিধা পেল, মানলাম এটা।
এরপর যখন বিশ্ববিদ্যালয় এ ভর্তির সময় এলো, তখনও তাদের জন্য কোটা এর বাবস্থা।
আমি আমাদের ভার্সিটি এর কোঠা বলি, ৪১০ টা সিট এর জন্য ১০০০০ পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়, তাদের মধ্যে থেকে সর্বশেষে যে ভর্তি হয় সে হল ১৫০০ তম, কিন্তু আমাদের এই মুক্তিযোদ্ধা কোটায় যারা ভর্তি হয়েছে তারা ৩০০০ তম পজিসন থেকে এসেছে। এ থেকে কি বুঝলেন...????????????
কেউ এতো কষ্ট করে পড়াশুনা করে ভর্তি পরিক্ষায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তাদের ছেয়েও ১৫/২০ মার্ক বেশি পেয়েও ভর্তি পেল না, আর কেউ কোটা এর মাধ্যমে অতি সহজেই ভর্তি হয়ে গেলো।
শুধু আমাদের ভার্সিটি তেই না, আমি জানি আর সকল ভার্সিটিতেও একই অবস্থা।
তাও আমরা মেনে নিছি...
কিন্তু এভাবে আর কতো?
এরপর যখন বিসিএস এর মতো ব্যাপার চলে আসে তখন আর মেনে নিতে পারতেছি না।
তাদেরকে(মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদেরকে) কিন্তু কম সুযোগ দেওয়া হয় নাই।
প্রথমে ভালো স্কুলে সবার আগে ভর্তি হতে সুযোগ দিছি, তারপরে সবাইকে পিছনে ফেলে ভালো ভালো কলেজেও ভর্তির সুযোগ দিছি, তারপরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির মতো একটা জায়গাতেও তাদের সুযোগ দিছি, তাদের সুযোগ দিতে দিতে আজ আমরা ক্লান্ত, আমরা রাগান্বিত।
এভাবে আর কতো...???
তাদের কে এতো ভালো ভালো জায়গায় পড়ার মতো সুযোগ দেবার পরেও যদি তারা তাদের মেধার সঠিক ব্যাবহার না করতে পারে তবে এর দায়ভার কে নিবে?
আমরা সাধারন ছাত্ররা কেন এর দায়ভার নিবো???? কেন????????
তাদের কি মেধা এতোই কম? এতোই কম যদি মেধা হয় তবে কি হিসেবে তারা সরকারি কর্ম কমিসনে কাজ করবে?
কোন যোগ্যতায়?
আর তো আর ছেলেখেলা না।
এই কোটা প্রথা নিয়ে পিএসসি এর এক্সন সাবেক সদস্য এর কথা সুনেনঃ
পিএসসির সাবেক সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক[/si] বলেন, [sb]কোটা পদ্ধতি মোটেই যৌক্তিক না। আমি যখন পিএসসির সদস্য ছিলাম তখনো আমি এই পদ্ধতির বিরোধিতা করেছি। তখন দেখেছি একজন ছেলে মেধাতালিকায় ৭৫তম স্থান পেয়েও তার চাকরি হয়নি। অথচ একজন মেয়ে মেধাতালিকায় ২০৩২তম হয়েও প্রশাসনে তার চাকরি হয়েছে।
কি আজব নিয়ম !!!
can u believe it.................????????????????!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
কোথায় ৭৫তম আর কোথায় ২০৩২..................।!!!!!
এই হল অবস্থা......
পিএসসির সাবেক একজন চেয়ারম্যান ও একাধিক সাবেক সচিবের বিশ্লেষণ এবং অন্তত দুটি প্রতিবেদনের সুপারিশ পর্যালোচনা করে সরকারি চাকরির কোটাব্যবস্থা নিয়ে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) পক্ষে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলি খান ও বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দীন আহমেদ যৌথভাবে কোটাব্যবস্থা সংস্কারে কিছু সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন দেন। তবে তা এখনো ফাইলবন্দী হয়ে আছে। সুপারিশে কোটা পদ্ধতি সংস্কার করে একে সহজ করার কথা বলা হয়।
সর্বশেষ ২০১১ সালে পিএসসির বার্ষিক প্রতিবেদনেও কোটাব্যবস্থার প্রয়োগ করা জটিল উল্লেখ করে বলা হয়, প্রচলিত কোটা পদ্ধতির কারণে উপযুক্ত প্রার্থী নির্বাচন শতভাগ নিখুঁতভাবে করা সম্ভব নয়। বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে উপযুক্ত প্রার্থী মনোনয়নের জন্য বর্তমানে প্রচলিত কোটা পদ্ধতির সরলীকরণ অপরিহার্য। অন্যথায় কোটা প্রয়োগসংশ্লিষ্ট জটিলতা থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।
বর্তমানে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে একেক দপ্তরে একেক রকম কোটাব্যবস্থা আছে। বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া প্রথম শ্রেণীর চাকরিতে ৫৫ শতাংশ বিভিন্ন কোটা ও ৪৫ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হয়। কোটার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান কোটা ৩০ শতাংশ, জেলা কোটা ১০ শতাংশ, নারী কোটা ১০ শতাংশ ও উপজাতি কোটা ৫ শতাংশ। এ ছাড়া ১ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা থাকলেও না পাওয়া গেলে মেধা কোটা থেকে পূরণ করা হয়।
আবার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যান্য কোটার পাশাপাশি ৬০ শতাংশ নারী কোটা আছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা। নিচের স্তরের পদগুলোতেও ভিন্ন ব্যবস্থা।
অনেকের অভিযোগ, কোটার কারণে কম মেধাবীরা বেশি চাকরি পাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে কোটার সুফলও পাওয়া গেছে। যেমন—প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নারী কোটায় শিক্ষক নিয়োগের ফলে বিদ্যালয়গুলোতে শিশুদের জন্য তুলনামূলক অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তাঁদের মতে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে কোটা থাকা উচিত, কিন্তু এর প্রয়োগ পদ্ধতি সহজ করতে হবে।
পিএসসির সাবেক একজন চেয়ারম্যান প্রথম আলোকে বলেন, বিদ্যমান কোটাব্যবস্থায় বৈষম্য তৈরি হয়। যেমন—কোনো একজন প্রার্থীর বাড়ি টাঙ্গাইলে। তাঁর মেধাক্রম ১৭। কিন্তু ওই জেলায় কোটায় নেওয়া যাবে তিনজন। ১৭ পর্যন্ত যাওয়ার আগেই যদি টাঙ্গাইলের কোটায় তিনজন পাওয়া যায়, তাহলে ১৭তম হয়েও চাকরি পাবেন না। বিপরীতে ১৪২তম হয়েও মেহেরপুরের একজন প্রার্থী কোটা খালি থাকলে চাকরি পেয়ে যেতে পারেন।
এ বিষয়ে আকবর আলি খান বলেন, যখন জেলা কোটা চালু হয়েছিল, তখন জেলা ছিল ১৯টি। এখন ৬৪টি। অথচ কোনো কোনো নিয়োগে ৬৪টি পদই থাকে না। তিনি বলেন, বর্তমান ব্যবস্থায় যে জেলায় জনসংখ্যা বেশি, সেই জেলা থেকে লোক নেওয়া হয়। কিন্তু কম জনসংখ্যা অধ্যুষিত এলাকার একজন প্রার্থী ভালো করলেও বাদ পড়ে যেতে পারেন।
পিএসসির একজন সাবেক চেয়ারম্যান নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, [sb]বেশির ভাগ সময় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় পদ খালি থাকে। প্রার্থী পাওয়া যায় না। কিন্তু সংরক্ষিত রাখার কারণে এই পদগুলোতে অন্যদেরও নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয় না। বিশেষ করে কারিগরি পদগুলোতে বেশি সমস্যা হয়। সম্প্রতি এ জন্য ৩২তম বিসিএসের মাধ্যমে আলাদা করে কারিগরি পদে লোক নিতে হয়েছে। তিনি বলেন, কোটা নিয়ে অনেক সমস্যা থাকলেও মূলত ‘স্পর্শকাতর’ বিবেচনায় কোনো সরকার এই ব্যবস্থা সংস্কার করে না। এতে দিনে দিনে জটিলতা বাড়ছে।[/sb]
সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার মনে করেন,[sb] বিদ্যমান কোটাব্যবস্থা অবশ্যই সংস্কার হওয়া উচিত। সংবিধান অনুযায়ী, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা থাকা উচিত। তাও সব মিলিয়ে ২০ শতাংশের বেশি থাকা উচিত নয়।[/sb]
জানতে চাইলে জনপ্রশাসনসচিব আবদুস সোবহান সিকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখনো সংস্কারের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেই। তবে ভবিষ্যতে হয়তো সংস্কারের বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হতে পারে।’
অনেকেই দেখি ভারতের কোঠা প্রথা এর কোঠা বলতেছেন। আমরা কথায় কথায় ভারতের নজির দেখাই। ভারত ব্রিটিশ থেকে প্রাপ্ত তার চাকরি কাঠামোগুলোকে বিবেচনাহীনভাবে বিপন্ন করেনি। অনুন্নত সমপ্রদায়ের জীবনযাত্রার মানকে তারা উন্নত করে চলছে। পাশাপাশি অতি সীমিত সংখ্যায় সর্বভারতীয় ও রাজ্য পর্যায়ে প্রথম শ্রেণীর চাকরির ভিত্তি পদে নিয়োগে তাদের টেনে আনার কিছু ব্যবস্থাও করেছে। কিন্তু সেসব পদ এ ধরনের সর্বগ্রাসী কোটার বিপরীতে ছেড়ে দেয়নি। ১৯৭৯ সালে অনুন্নত সম্প্রদায়গুলোকে সরকারি চাকরিপ্রাপ্তি ও সরকার পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ইত্যাদি বিষয়ে বিবেচনার জন্য একজন সাংসদ বিপি মণ্ডলের নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠন করা হয়। উল্লেখ্য, ভারতের ৫৪ শতাংশ মানুষ অনগ্রসর শ্রেণীভুক্ত। মণ্ডল কমিশন ১৯৮০ সালে প্রদত্ত তাদের প্রতিবেদনে ৪৯ দশমিক ৫ শতাংশ চাকরি তাদের জন্য সংরক্ষিত রাখা আর একই অনুপাতে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন সংরক্ষিত রাখার প্রস্তাব করে। ভিপি সিং প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে এ সুপারিশ বাস্তবায়নের একটি প্রচেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন। দেশের সামগ্রিক দিক বিবেচনায় সচেতন ভারতবাসী, এ রিপোর্টটির বিপরীতেই অবস্থান নিয়েছিল। আর সে অবস্থান ছিল ভারতকে আধুনিক ও উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে মেধাকে প্রাধান্য দেওয়ার জন্য। এর সুফল আজ তারা ভোগ করছে।
কি বুঝলেন?
সরকার কি শুধু মাত্র এই কোঠা এর মাদ্ধমেই মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানাবে???
আর বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের ছেলে কি তবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান না????
বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের ছেলের জীবন কাটে চায়ের দোকানের পানি টেনে
বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের ছোট ছেলে শওকত আলী পাটোয়ারী। বাবা বীরশ্রেষ্ঠ হলেও নিজে যেন হেরে যাচ্ছেন জীবনযুদ্ধে। দারিদ্র্র্যের সঙ্গে লড়াই করে স্ত্রী ও একমাত্র শিশুকন্যাকে নিয়ে কোনো রকমে বেঁচে আছেন শওকত। কখনো করাত কলে গাছ টেনে কখনো বা চায়ের দোকানের পানি টেনে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার বাগপাচড়া গ্রামে ১৯৩৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন। তাঁর দুই ছেলে তিন মেয়ের মধ্যে বড় ছেলে মো. বাহার প্রায় ১৪ বছর আগে মারা যান। তিন মেয়ে বিয়ের পর থেকে স্বামীর বাড়িতে বসবাস করছেন। ছোট ছেলে শওকত। স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন যখন শহীদ হন, তখন শওকতের বয়স দুই বছর। বর্তমানে ৪০ বছর বয়সী শওকত তাঁর বাবার ভিটেতেই আছেন। স্ত্রী রাবেয়া আক্তার (৩০) ও মেয়ে বৃষ্টিকে (৭) নিয়ে শওকতের সংসার। শওকত জানান, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম কাজ করে কোনো রকমে সংসার চালান। তিনি বলেন, ‘বাবা বীরদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন—সেই গর্বে সব দুঃখ, কষ্ট ভুলে থাকি।’ অর্থকষ্টের কারণে মংলা বন্দরে গিয়ে বাবার সমাধিটিও দেখার সৌভাগ্য হয়নি বলেই কেঁদে ফেলেন শওকত।
শওকতের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার বলেন, ‘এ ঈদেও নিজেরা কোরবান দিতে পারিনি। পাড়ার লোকজন যখন দুই-তিন টুকরা গোসত হাতে করে দিয়ে যান তখন কষ্টে বুক ফেটে যায়।’ তিনি অভিযোগ করেন, সরকারি সাহায্যও সেভাবে তাঁদের কাছে পৌঁছে না।
বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন জাদুঘর ও গ্রন্থাগারের সভাপতি আতাউর রহমান (৭৬) প্রথম আলোকে বলেন, এলাকাবাসীর সহায়তায় শওকত কোনো রকমে বেঁচে আছে। সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী আবদুর রহমান বলেন, শওকতকে সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান শুধু এই কোঠা দিয়েই হয় না। আশা করি বুঝতে পারেছেন।
মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানের এই কোঠা এমন আকার ধারন করেছে যে কিছু দিন পর হয় জাতীয় বিভিন্ন খেলা-ধুলা প্রতিযোগিতায় এমন হবে যে প্রথম স্থান রাখা হবে তাদের জন্য, আর বাকি ১ম আর ২য় স্থানের আমাদের প্রতিযোগিতা করতে হবে। :p :p
শেষে শুধু একটা কথাই বলতে চাই... কোঠা প্রথার অবসান করতেই হবে।
No comments:
Post a Comment