xmlns:fb='http://ogp.me/ns/fb#'> কোটা প্রথা... কি করা দরকার? বিলোপ নাকি সংশোধন? |Bappi

U also may b interested in these posts

 

Floadting Share

Get Widget

Tuesday, July 2, 2013

কোটা প্রথা... কি করা দরকার? বিলোপ নাকি সংশোধন?

_________________________________________________________________________________

যে কারণে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান/নাতি-নাতনি কোটা বা জেলা কোটা ইত্যাদি বাতিল করা প্রয়োজন, সে কারণেই বৈষম্যের শিকার, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা রাখা প্রয়োজন। প্রশ্নটা তথাকথিত মেধা মূল্যায়নেরনয়, প্রশ্নটাসুযোগের সমতার

যতদিন সমাজে বৈষম্য থাকবে, আর্থসামাজিক অবস্থা ভেদে কথিত মেধাবিকাশের সুযোগের তারতম্য থাকবে, ততদিন এই বৈষম্যের শিকার জনগোষ্ঠীকে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা চাকুরিতে কোটার মাধ্যমে সমতা বিধানের সুযোগ দিতে হবে। তবে সেটা

অবশ্যই মুক্তিযোদ্ধার সন্তান/নাতি-নাতনি কোটার মতো কোন অযৌক্তিক বৈষম্য সৃষ্টি কারী কোটার মাধ্যমে নয়। দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানরা
আলাদা ভাবে বৈষম্যের শিকার বা ‘পিছিয়ে পড়াজনগোষ্ঠী নয়; দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ যে মাত্রায় পিছিয়ে পড়া’,মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরাও সে মাত্রায় পিছিয়ে পড়া। কেবল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হওয়ার জন্য কারও শিক্ষা কিংবা চাকুরির সমস্যা হয় এরকমটা কখনও ঘটে না, যেমনটা হয় দরিদ্র আদিবাসী/পাহাড়ি কিংবা প্রতিবন্ধীদের। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের শিক্ষা কিংবা চাকুরির যে সমস্যা, তার কারণ দারিদ্র ও বৈষম্য, মুক্তিযোদ্ধা হওয়া নয়।

সেই সাথে এটাও মনে রাখা প্রয়োজন যে, কোটা ব্যাবস্থাটি বৈষম্য নিরসনের জন্য স্থায়ী কিংবা কার্যকর কোন পদ্ধতি হতে পারে না। কেবল মাত্র আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বৈষম্য নিরসনের মাধ্যমেই সুযোগের সমতা বিধান সম্ভব। তাই রাষ্ট্রকে অর্ন্তবর্তীকালিন উপায় হিসাবে বৈষম্যের শিকার জনগোষ্ঠীকে যেমন কোটা সুবিধা দিতে হবে, তেমনি দীর্ঘমেয়াদে এমন পদক্ষেপ নিতে হবে যেন সেই সব জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক অবস্থার স্থায়ী পরিবর্তনের মাধ্যমে এক পর্যায়ে কোটা ব্যাবস্থা অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। এ ক্ষেত্রে সংবিধানের ২৯ ধারার সাথে আমি একমত:

২৯(১): প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ-লাভের ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা থাকিবে।

২৯(২): কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিক প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ-লাভের অযোগ্য হইবেন না কিংবা সেই ক্ষেত্রে তাঁহার প্রতি বৈষম্য প্রদর্শন করা যাইবে না।

এই ভাবে সুযোগের সমতাকে সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার পর, সংবিধানে আবার অনগ্রসর অংশের জন্য নিয়োগ সংরক্ষণবা কোটা রাখারও অনুমোদন দেয়া হয়েছে:

২৯(৩): এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই-

(ক) নাগরিকদের যে কোন অনগ্রসর অংশ যাহাতে প্রজাতন্ত্রের কর্মে উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব লাভ করিতে পারেন, সেই উদ্দেশ্যে তাঁহাদের অনুকূলে বিশেষ বিধান-প্রণয়ন করা হইতে,

(খ) কোন ধর্মীয় বা উপ-সমপ্রদায়গত প্রতিষ্ঠানে উক্ত ধর্মাবলম্বী বা উপ-সমপ্রদায়ভুক্ত ব্যক্তিদের জন্য নিয়োগ সংরক্ষণের বিধান-সংবলিত যে কোন আইন কার্যকর করা হইতে,

(গ) যে শ্রেণীর কর্মের বিশেষ প্রকৃতির জন্য তাহা নারী বা পুরুষের পক্ষে অনুপযোগী বিবেচিত হয়, সেইরূপ যে কোন শ্রেণীর নিয়োগ বা পদ যথাক্রমে পুরুষ বা নারীর জন্য সংরক্ষণ করা হইতে,

রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করিবে না।


কোটা প্রথা সংস্কার নিয়ে চলমান আন্দোলন নিয়ে অনেকেই ধুম্রজাল সৃষ্টি করছে আবার অনেকেই ধোঁয়াশার মাঝে আছে ; আমি আবারো স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা কোটা প্রথা সংস্কারের মাধ্যমে একটি যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনার পক্ষে, বাতিলের জন্য আন্দোলন নয়!

দেশে ৫৬% কোটা থাকা যেমন অযৌক্তিক ঠিক একইভাবে পুরোপুরি কোটা তুলে দেয়াও একটি অযৌক্তিক এবং অমানবিক কাজ বলেই গণ্য হবে! সময় এসেছে উভয়ের মাঝে একটা চেক অ্যান্ড ব্যাল্যান্সের যাতে করে উভয়পক্ষের মাঝে একটি ন্যায্যতা বজায় থাকে!

মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের দেশের সূর্য সন্তান এবং অবশ্যই দেশের যে কোনধরনের কাজেই অগ্রাধিকার পাবার দাবিদার, তাই মুক্তিযোদ্ধা কোটা ১০%-১৫% রাখা হোক, এতে করে কারোই কোন আপত্তি থাকার কথা না! আর কয়েকবছর পর সম্ভবত আর ৬-৮ বছর পরেই প্রাকৃতিকভাবেই অধিকাংশ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা বিসিএস'র জন্য পরীক্ষা দেয়ার নির্ধারিত বয়স পেড়িয়ে যাবে! এরপর আমরা মুক্তিযোদ্ধার নাতি-পুতিদের এই কোটা সুবিধার সুযোগ দেব কিনা সেটা নিয়ে অবশ্যই ভাবতে হবে, এক্ষেত্রে হয়ত এই ধরনের সুযোগ দেয়া একটু অতিরিক্তই হয়ে যায় যদিও বিশ্বাস করি মুক্তিযোদ্ধাদের ঋণ কোনভাবেই শোধ করার মত নয়;

প্রতিবন্ধী কোটা ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবেই; ৫% প্রতিবন্ধী কোটা নিয়ে কেউই কোন কথা তুল্বেই না বলে বিশ্বাস করি!

আদিবাসী কোটা ৫% করা হলে কারো আপত্তি থাকার কথা না আর এক্ষেত্রেও ৫% কোটা সুবিধা হলে অনেকেরই ভাষ্যমতে তারা যে সুযোগবঞ্ছিত তা সম্পূর্ণ ভাবেই দূর হয়ে যাবে বলেই মনে হয়!

আর সবশেষে নারী কোটা এবং জেলা কোটা প্রসঙ্গে- নারীদের যেহেতু স্নাতক পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং সমাজে ধীরে ধীরে নারীদের অবস্থান বদলাচ্ছে সেহেতু নারী কোটা এখন ০% তে নামিয়ে আনলে, নারীরাও বিশেষ অসুবিধার শিকার হবে নাই বলে প্রতীয়মান হয় এবং এক্ষেত্রে নারীরাও প্রতিবাদ করবে না!

জেলা কোটার কোন দরকার আছে বলে অন্তত আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি না তাই এইটা সম্পূর্ণ রূপে বাতিল করে দেয়া হোক ...

পরিশেষে বলা যায়, কোটা প্রথা সংস্কার করে ৫৬% থেকে নামিয়ে একটি যৌক্তিক এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ পর্যায়ে নিয়ে আসা হোক যেটা হতে পারে ২০%-২৫%;




কাজেই কোটা ব্যাবস্থা বাতিলের দাবীতে শাহবাগের আন্দোলনকারীদের প্রতি আহবান, আপনার কোটা ব্যাবস্থার সম্পূর্ণ বাতিল নয়, কোটা ব্যাবস্থায় বৈষম্য নিরসনের দাবী তুলুন, কথিত মেধা মঞ্চেরনাম বদলে বৈষম্য নিরসন মঞ্চনাম দিন।
___________________________________________________


এই লিঙ্ক থেকেও বিস্তারিত পরে আসতে পারেন।
___________________________________________________
Hasibul Islam Bappi
Socialize It →
Follow Me →
Share with Friends →

No comments:

Post a Comment

Receive All Free Updates Via Facebook.

Blogger Widgets..

Receive All Free Updates Via Facebook.

Receive All Free Updates Via Facebook.