_________________________________________________________________________________
বাংলাদেশের পোশাক খাতের নিরাপত্তার জন্য উত্তর
আমেরিকার কোম্পানিগুলোর ঘোষিত চুক্তিকে ‘দাঁতহীন’ বলে উড়িয়ে
দিয়েছে ইউরোপপ্রধান কোম্পানিগুলোর চুক্তির সমর্থকরা।
এর আগে গত বুধবার ওয়াশিংটনে
পাঁচবছর মেয়াদী এ চুক্তির ঘোষণা দেয় অ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার সেফটি
নামে মার্কিন কোম্পানিগুলোর জোট। এ চুক্তির আওতায় তাদের ব্যবহৃত
প্রতিটি কারখানা
আগামী একবছরের মধ্যেই পরিদর্শন করা হবে।
ইন্টারফেইথ সেন্টার নামে একটি
সামাজিক সংগঠন দাবি, মার্কিন কোম্পানিগুলোর পরিকল্পনায় যথাযথ নিরাপত্তা ও
দায়বদ্ধতার অভাব রয়েছে। একে ইউরোপপ্রধান কোম্পানিগুলোর দুর্বল বিকল্প বলে মন্তব্য করে তারা।
এছাড়া ইউরোপিয়ান কোম্পানিগুলোর
সঙ্গে যুক্ত ইউনিয়নগুলো মার্কিন অ্যালায়েন্সকে ‘আরেকটি দাঁতহীন
উদ্যোগ’ বলে অভিযোগ করেছে। এমনই একটি ইউনিয়নের মুখপাত্র টম গ্রিন্টার এ উদ্যোগকে ‘আন্তরিক নয়’ বলে জানান।
মার্কিন কোম্পানিগুলো তাদের চুক্তি
অনুযায়ী আগামী একবছরের মধ্যে তাদের ব্যবহৃত ৫শ’রও বেশি কারখানা
পরিদর্শন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্যদিকে, ইউরোপপ্রধান চুক্তির ৭০ সদস্য তাদের
ব্যবহৃত কারখানাগুলো আগামী নয়মাসে পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মার্কিন শীর্ষ খুচরা বিক্রেতা
কোম্পানি ওয়ালমার্টের চিফ কমপ্লায়েন্স অফিসার জে জর্গেনসেন দাঁতহীন উদ্যোগের
অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি মনে করি দুটি পরিকল্পনাই খুব শক্তিশালী এবং আমাদের
একসঙ্গে সামনে এগিয়ে যাওয়া উচিত। তারা বোঝে না যুক্তরাষ্ট্রের আইনী ব্যবস্থা
কিভাবে কাজ করে। এ ব্যবস্থার কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ কোম্পানি তাদের সঙ্গে
যোগ দেয়নি।’
ইউরোপপ্রধান চুক্তিতে মার্কিন শীর্ষ
কোম্পানিগুলোর যোগ না দেওয়ার মূল কারণ ছিল ওই চুক্তির আইনী দায়বদ্ধতা। এর ফলে কোনো
কোম্পানিকে সেই দেশের আদালতের কাছে চুক্তি অনুযায়ী কাজ করার জন্য দায়বদ্ধ থাকতে
হবে। কোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিলও করা যাবে না।
অন্যদিকে, মার্কিন চুক্তিতে
নিজেদের জোটের মধ্যেই কোম্পানিগুলো দায়বদ্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন জর্গেনসেন।
জোটের কোনো সদস্য চুক্তিমতো কাজ না করে তাকে বের করে দেওয়া হবে ও তার অর্থ রেখে
দেওয়া হবে। বরাদ্দকৃত মোট অর্থের দশভাগ রেখে দেওয়া হবে কারখানার মেরামত চলাকালে
শ্রমিকদের ব্যয়ভার বহন করার জন্য।
ওয়ালমার্ট, টার্গেট, সিয়ার্স হোল্ডিংস, ভিএফ, জেসি পেনি, দ্য চিলড্রেন
প্লেস রিটেলি স্টোরস, গ্যাপ, মেসি’স সহ মার্কিন
অ্যালায়েন্সে এ পর্যন্ত ১৭টি প্রতিষ্ঠান সই করেছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বরে
আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় তাজরীন ফ্যাশন লিমিটেডের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে
১১২ জন শ্রমিক পুড়ে মারা যান। এছাড়া অসংখ্য আহত হন। এ ঘটনার পর এ বছরের ২৪
এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধসে এক হাজার একশ ৩০ জন শ্রমিকের প্রাণহানি ঘটে।
এরপর থেকেই বাংলাদেশে পোশাক
উৎপাদনকারী বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রমিকদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিয়ে অবহেলা
নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয় বিশ্বজুড়ে। যার প্রেক্ষিতে পৃথক উদ্যোগ নেয়
ইউরোপপ্রধান ও মার্কিন কোম্পানিগুলো।
No comments:
Post a Comment