xmlns:fb='http://ogp.me/ns/fb#'> জন্মদিন সেলিব্রেসন ২০১৪: একটি বৃদ্ধাশ্রম ভ্রমন। |Bappi

U also may b interested in these posts

 

Floadting Share

Get Widget

Thursday, November 27, 2014

জন্মদিন সেলিব্রেসন ২০১৪: একটি বৃদ্ধাশ্রম ভ্রমন।

গত ২রা নভেম্বর ছিল আমার জন্মদিন। অন্নবারের মতোই আবারেও আমার জন্মদিন সেলিব্রেট করা হয় নাই। তবে এবারে জন্মদিনটা ছিল একেবারেই ইউনিক টাইপের। J আমার দীর্ঘ ১০ বছরের লালিত স্বপ্ন পূরণ হয়েছিল এইদিনে। সেই সাথে একটা ১০০কিমি.+ রাইড। J
আমি কখনোই আমার জন্মদিন উদযাপন করি না। অন্তত নিজে নিজে বুঝতে শেখার পর থেকে না। সর্বশেষ কবে নিজের জন্মদিনের কেক কেটেছি ঠিক মনে পরে না। তবে মনে হয় সেটা প্রাইমারি স্কুলে থাকার সময়ে। আর গতবার ২০১৩ তে আমাকে এক্কেবারে সারপ্রাইজ দিছে আমার দুই কাছের বন্ধু আযাদি আর শিমুল। সেদিন অবশ্য কেক খাইতে হইছিল। 
যাই হোক, যেটা বলতেছিলাম। তো বরাবরের মতোই এবারেও কোন প্ল্যান ছিল না নিজের জন্মদিন সেলিব্রেট করার জন্য। গত ঈদ এর সময় বিটিভি (মনে হয়) বৃদ্ধাশ্রম এর উপরে একটা রিপোর্ট দেখিয়েছিল। সেখানে দেখিয়েছি সেখানে বৃদ্ধ বৃদ্ধারা কি রকম জীবন জাপন করতেছিল। সেই সেম রকমের একটা অনুস্থান দেখেছিলাম ২০০৪ এ। আমার মনে আছে।
সেদিন ঠিক করেছিলাম আমি কোন না কোন দিন এরকম একটি বৃদ্ধাশ্রম এ একদিন ঘুরে আসবো। তো ঈদ এর সময়েই ঠিক করি যে এখানে যাব।
এরপর ঈদ এরপরে ঢাকায় ফিরে খোঁজ লাগান শুরু করি কই আছে এই সব বৃদ্ধাশ্রম। বেশ খোঁজাখুঁজি এর পরে পেলাম সেখানকার অ্যাড্রেস। এর পরে গুগল ম্যাপ এ একটু খাটাখাটি করে এক্স্যাক্ট লোকেশন বের করে ফেলি সেই বৃদ্ধাশ্রম এর।
...ঠিক করি যে নিজের জন্মদিন এর সারাটা দিন কাটাব এই সব অসহায় বৃদ্ধ বৃদ্ধা এর সাথে... তাদের কে তাদের ছেলেমেয়ে হয়তো ত্যাগ করেছে, কিন্তু কেউ না কেউ তাদের জন্য আছে এই বিশ্বাসটুকু তাদের মাঝে আবার ছড়িয়ে দেবার জন্যই সেখানে যাবার প্ল্যান মূলত। আর সেই ২০০৪ থেকে লালন করা একটা স্বপ্নও পূরণ হবে প্রায় ১০ বছর পরে। ভেবেই সেই রকমের শান্তি শান্তি লাগতেছিল। আর নিজের জন্মদিন তাদের সাথে পালন করতে পারবো, তাদেরকে কেক খাওয়াতে পারব ভেবে সত্যি সত্যি বারবার শিহরিত হচ্ছিলাম। তাদের নিজেদের ছেলেমেয়েরা হয়তো তাদের জন্মদিনে তাদেরসাথে পালন করতেছে না, তাদের সাথে কেক কাটতেছে না। কিন্তু... না। এতে কষ্ট পাবার কিছু নেই... নিজের ছেলে মেয়ে না থাকলেও অন্য কেউ আছে যারা তাদের সাথে নিজের জন্মদিন শেয়ার করতে আসছে... তাদের মুখে কেক তুলে দিচ্ছে... এটার জন্যই সেখানে আমি...
এখানে আমার জন্মদিন পালন নিয়ে কিছু কথা বলে রাখা ভালো আমি মনে করি। জেনে গেছেন যে আমি আসলে কখনোই আমার জন্মদিনে কেক কাটি না। কেন?
কেন এই অসামাজিক (!) কাজটি করি আমি? “অসামাজিক” শব্দটার পরে আমি একটা “!” ইউজ করালাম। কারণ আসতেছি...
...আমি বড় হয়েছি একেবারে গ্রামে। গ্রাম বলে সেই রকমের গ্রাম। বললে হত বিশ্বাস করবেন না, আমাদের বাসায় কারেন্ট গেল এই ৬/৭ মাস হবে। আমি সেখানে বড় হয়েছি। সেখানে লেখাপরা করেছি স্কুল লাইফের পুরাটা সময়। আরেকটা ইনফো দেই, তাহলে বুঝতে সুবিধা হবে। আমার বাসা থেকে ইন্ডিয়ান বর্ডার মাত্র ৩.৫ কিমি. দূরে। গোলাগুলিহলে বাসা থেকে আওয়াজ পাওয়া যায়।
যাই হোক, যেটা বলতেছিলাম। এই রকম একটা রিমোট এরিয়াতে আমি বড় হয়েছি। সেখানে জন্মদিন পালন তো দুরের কথা আমার বেশিরভাগ ফ্রেন্ডই তাদের জন্মদিন এর তারিখটা পর্যন্ত জানে না। তো তাদের সামনে যখন আমি আমার জন্মদিন নিয়ে গল্প করতাম তখন তারা অনেক অবাক হয়ে থাকতো। মাঝে মাঝে খেয়াল করতাম তারা অনেকি মন খারাপ করতো। আবার অনেককে তাদের জন্মদিন জিজ্ঞেস করে তাদের কাছে আমতাআমতা উত্তর পেতাম। এটা দেখে দেখে আমার খারাপ লাগা শুরু। আর এই ঘটনা গুলো সব আমার প্রাইমারি স্কুল লাইফের সময়ের কথা। তখন থেকেই জন্মদিন সেলিব্রেসন এর উপরে খারাপ লাগা শুরু। এরপরেও বাসায় ছোটোখাটো জন্মদিন সেলিব্রেট করলেও সেটা তাদের সাথে শেয়ার করতাম না। তাদের সাথে তাদের মতোই থাকতে চেষ্টা করতাম। এভাবেই জন্মদিন সেলিব্রেসন থেকে দূরে থাকা...
...এরপরে হাই স্কুল লাইফ এ এসে ইসলামিক কিছু পড়াশুনা করে দেখলাম যে কেক এর উপরে মোমবাতি জ্বালিয়ে নিয়ে কেক কাটা আসলে ঠিক না। এরপর থেকে তো এক্কেবারে বাদ দিয়ে দিলাম আমার জন্মদিন উদযাপন। হাই স্কুল লাইফে কেউ কখনো আমার আমার জন্মদিন নিয়ে কোন কথা বলতে শুনে নাই মনে হয়। খুব কাছে কেউ কেউ হয়ত জানত আমার জন্মদিন কবে। হালকায় উইস করা হত, আর কেউ কেউ হয়তোবা বই গিফট করতো। এই...
...এরপর কলেজ লাইফেও এরকম করেই কাটিয়েছি। কেউ জিজ্ঞেস করলে বলতাম না পর্যন্ত। :D আর যখন সেকেন্ড ইয়ার এ উঠেছিলাম তখন কলেজ হোস্টেল এ আবার জুনিয়র রা ধরে জোর করে জন্মদিন সেলিব্রেট করতো। তো আমার স্কুল থেকেও কিছু  জুনিয়র এসেছিল। তারা আমার জন্মদিন সেলিব্রেট করবেই করবে... এজন্য সেদিন ঠিক করেছিলাম যে আমি সারাদিন মৌনব্রত পালন করবো। মানে সারাদিন কারো সাথে কোন কথা বলবো না। :D এবং আসলেই সেদিন সারাদিন কারো সাথে কোন কথা বলি নাই। এক্কেবারে ২৪ ঘণ্টা সাইলেন্স। :D
...এরপর আসা যাক অ্যাডমিশন টেস্ট লাইফের কথা। সেই সময় আমার জন্মদিন যে ছিল সেটা আমার মনেই ছিল না। আমার আম্মু আমাকে দুপুরে ফোন করার পরে মনে হয়েছিল যে এদিন আসলে আমার জন্মদিন। যতদূর মনে পরে ২০১০ এর আমার জন্মদিনের দিন আমি রাজশাহী তে ছিলাম। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এর ভর্তি পরীক্ষা ছিল সেদিন।
হ্যা ডায়েরি ঘেঁটে দেখলাম সেদিন আসলে “এইচ” ইউনিট এর পরীক্ষা ছিল। রোল ছিল এইচ-০৪৫৬২ আর সেই পরিক্ষায় আমার মেরিট পজিসন এসেছিল ১২৬তম 
এরপরে ভার্সিটি লাইফে হলে থাকলেও কখনোই জন্মদিন পালন হয় নাই। করতে দিতাম না। ফ্রেন্ডদেরকে মানা করতাম।

তো এবারে ডিফারেন্টলি করলাম। জন্মদিনের আগের দিন আমার এফবি আইডি ডিএকটিভেট করে দেই। অন্য আইডি এর জন্মদিন হাইড করে দেই। রাত ১১.৫০ থেকে ফোন বন্ধ করে দেই।  রাত ১ টা পর্যন্ত  রুমে ছিলাম না জুনিয়র বা ফ্রেন্ডরা আসবে এই জন্য। রাত ২ টার দিকে ঘুমাই। সকাল ৬.১৫ মিনিটে ঘুম থেকে উঠেই অন্য কেউ ঘুম থেকে উঠার আগেই সাইকেল নিয়ে বের হই হল থেকে। আগের রাতে ঘুমাতে যাবার আগেই ব্যাগ গুছিয়ে রেখেছিলাম। টানা দুই ঘণ্টা সাইকেল চালিয়ে থেমেছিলাম এক জায়গায়। চা খাবার জন্য। সেই সাথে স্যালাইন আর জুস খাবার জন্য। গাজিপুর পার হয়ে টের পেয়েছিলাম কি রকমের চরম একটা খারাপ রাস্তা এইটা। ঢাকা-ময়মন্সিং হাইওয়ে এর কাজ চলতেছে বলে চরম রকমের বাজে একটা রোড এইদা। 
গাজীপুর পার হয়ে এক বেকারি থেকে কেক কিনেছিলাম। জীবনে কেনা প্রথন জন্মদিনের কেক। সেটা আবার নিজের টাকায় কেনা কেক। 
যাই হোক সেখান থেকেই সেখানকার কেয়ারটেকার এর সাথে কথা বলে নেই যে আমি আসতেছি। বেশ কিছু প্যাঁচ খেলে খেলে রাস্তা বের করে চলে গেলাম একেবারে বৃদ্ধাশ্রম এর গেট এ। এজন্য আমাকে জিপিএস আর এন্ডোমন্ডো হেল্প করেছে। তো সেখানে গেটেই আমার ক্যামেরা আটকিয়ে দিল।  ছবি তোলা নিষেধ। আর এজন্যই কি ভিতরের কোন পিক নাই এই পোস্ট এ।
তবুও খুব একটা আফসোস হয় নাই। আমাকে প্রবেশ এর অনুমতি দিয়েছে এটাই এনাফ আমার জন্য। :D সময় দিছিল ২০ মিনিট। কিন্তু ঢাকা থেকে সাইকেলে এসেছি শুনে সেই সময় আরও কিছু এক্সটেন্ড করেছিল।
সেখানে প্রবেশ করে ঘণ্টা খানেকের মতো ছিলাম। তাদের সাথে অনেক অনেক কথা বললাম। গল্প, আড্ডা, হাসিতে কখন যে সময় কেটে গেছে টেরই পাই নাই। L অনেকেই বিশ্বাস করতে পারতেছিলেন না যে আমি আমার জন্মদিন তাদের সাথে কাঁটাতে সুদুর ঢাকা থেকে সাইকেলে করে তাদের জন্য কেক নিয়ে এসেছি। কয়েক জনের চোখে চিকচিকে পানি দেখতে পেয়েছি আমি। 

       কয়েকজন তো আফসোস করে বলতেছিল, “বাবারে, আমাদের নিজেদের ছেলে খোঁজ খবর নেয় না। জারে জন্ম দিলাম সেই তার জন্মদিন আমার সাথে পালন করে না, আর তুমি কে না কে এসেছ আমাদের সাথে জন্মদিন পালন করতে...!!!”
       আসলেই তাদের সাথে আমার জন্মদিনটা কাটিয়ে অনেক ভালো কাজ করেছি মনে হচ্ছে। তাদের চোখের পানিই বলে দিচ্ছিল সেই কথা... তাদের কাছে একটা দোয়াই চেয়েছিলাম, আমার বাবা মাকে যেন কখনো এরকম জায়গায় থাকতে না হয়।
 শেষে ফেরার সময় হয়েছিল এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য। অনেকেই আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেছিল। আমিও মনে হয় কেদেছিলাম কিছুটা। কিন্তু ছেলে মানুষের নাকি কাদতে নাই, তাই সাথে সাথেই লিকুয়ে ফেলেছিলাম সেটা। যখন টাইপ করতেছি তখন সেই সময়ের কথা মনে পরে গিয়ে গায়ের লোম দাড়া হয়ে যাচ্ছে।  আসলে সেই সময়ের অনুভুতি, ভালোলাগা, বা ভালোবাসায় সিক্ত হওয়াটা আমি আপনাদের বুঝাতে পারবো না আমি। 


যাইহোক চলে আসার সুময় অনেক খারাপ লাগতেছিল কিন্তু কি আর করার। আসতেই হবে...
এরপরে ঠাডা পড়া রোদের মদ্ধে দিয়ে সেই ভাঙ্গাচুরা রাস্তা ধরে চলে এলাম হলে। আসার সময় কান ধরে সপথ করেছি যে আগামী ৪ বছরের মদ্ধে আর আমি এই ঢাকা-ময়মনসিং হাইওয়ে ধরে সাইক্লিং করবো না।


যাই হোক, ১০০কিমি. হতে আর কিছু বাকি ছিল বলে হাতিরঝীল এ বাকিটা সাইক্লিং করে ১০০ কিমি. পূরণ করি।
এরপরে হলে এসে ফ্রেশ হয়ে একটা ঘুম, ঘুম থেকে উঠে সন্ধ্যায় চলে যাই বাইসাইকেল ফেস্টিভ্যাল এ। সেখান থেকে হলে আসার পথে হাতিরঝীল এ কিঞ্চিৎ সাইক্লিং করে আসি।
যাইহোক এই টোটাল ১০০ কিমি. সাইক্লিং করতে আমার সময় লেগেছিল ৪ঘন্টা ২৭ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড। আর এটা ছিল সেদিন পর্যন্ত আমার দ্রুততম ১০০ কিমি.। এখন অবশ্য এই রেকর্ড ৩ ঘণ্টা ৫০ মিনিট ১৬ সেকেন্ড এর। 


কি মনে হচ্ছে না এখানেই আমার জন্মদিন এর ঘটনা শেষ? আসলে না... আরও সারপ্রাইজ অপেক্ষা আছে রাতে। রাতে ফ্রেন্ডরা নিয়ে এলো কেক। না করতে পারলাম না। ভার্সিটি লাইফের শেষ জন্মদিনের কেক। 
ছাদে চলে গেলাম সবাই মিলে। আমি আর কাতলাম কই, তারাই কাটল। আমি আর খেলাম কই, তারাই খেল। :D এই না হলে বন্ধুত্ব। আরও সারপ্রাইজ ছিল। আমার জন্মদিন উপলক্ষে ছাদের আয়োজন করা হল এক সঙ্গীতানুষ্ঠান এর। :D
তার আগে একটা আকাম করেছি। :p আমার স্মরণে সমরিতা মেডিকেল কলেজ এর উদ্দেশ্যে আমরা কয়েকজন মুত্র ত্যাগ করেছিলাম :D 



সবাই সেখানে গান গাইলাম... গানে গানে মজায় মজায় রাত ২ টায় ঘুমাতে গেছিলাম। ধন্যবাদ জানাতেই হয় বন্ধু হিমেল, বাতেন, নাসিফ, সেতু, ঝিকু, রাহুল, আলআমিন, দ্বীপ, সবুজ আচারিয়া কে। তোদের জন্যই আমার এবারের জন্মদিন এত সুন্দর করে কাটল রে। থ্যাংকস।
J
থ্যাংকস for being such friend and making my last birthday in versity life so memorable. J





























Thanks...
====> Always feel free to SHARE so that your friends can can know these informations. Keep visiting this blog site for more. U also can submit your email to SUBSCRIBE this blog.

Thanks again. :)






No comments:

Post a Comment

Receive All Free Updates Via Facebook.

Blogger Widgets..

Receive All Free Updates Via Facebook.

Receive All Free Updates Via Facebook.